সকল সমালোচনাকে পেছনে ফেলে ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ পর্দা উঠে কাতারে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে আমেরিকান সুপারস্টার মরগান ফ্রিম্যানের সঙ্গে মঞ্চে দেখা যায় এক তরুণকে।
অন্য সব পাশে রেখে ফুটবলপ্রেমী ও নেটিজেনদের আলোচনায় এখন এই তরুণ। কাতারে জন্ম নেওয়া এই তরুণের নাম গানিম আল মুফতাহ।
যিনি এই বছর ফিফা বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূতের একজন। ২০ বছর বয়সী গানিমের জন্ম থেকেই দুই পা নেই। ‘কডাল রিগ্রেশন সিন্ড্রোম’ রোগে আক্রান্ত তিনি। খুব কম মানুষেরই এই রোগ দেখা যায়।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি গানিমের সামনে। ছোট থেকেই শারীর নিয়ে অনেক বেশি কথা বলতে ও শুনতে হয়েছে তাঁকে। সহপাঠী-বন্ধুদের বোঝাতেন, তাঁর অসম্পূর্ণ শরীরের জন্য সে মোটেও দায়ী নন। সৃষ্টিকর্তা তাঁকে যে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে পাঠিয়েছেন, তাতে তিনি কৃতজ্ঞ।
এই ইতিবাচক কথা বলতে বলতেই গানিম হয়ে গেছেন মোটিভেশনাল স্পিকার। এখন অনেক মানুষের অনুপ্রেরণাও এই তরুণ। তাঁর ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। সেখানে মানুষকে অনুপ্রেরণা দিতে বিভিন্ন কথা বলে। তাঁর আইসক্রিমের ব্যবসাও রয়েছে।
গতকাল মরগান ফ্রিম্যানের সঙ্গে যখন মঞ্চে পরিচিত হচ্ছিলেন, তখন গানিম ধর্মীয় গ্রন্থ পবিত্র কোরআন থেকে কথা বলেন। মরগ্যানের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে গানিম সূরা হুজরাতের ১৩ নম্বর আয়াত তুলে ধরেন, হে মানব, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সেই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত, যে সর্বাধিক পরহেজগার। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে মরগান ফ্রিম্যানের সঙ্গে নিজের একটি ছবি শেয়ার করেছেন গানিম। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গানিম পরোপকারের জন্য পরিচিত। অভাবী-দুস্থ পরিবারকে সহায়তা করতে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব গানিম।
তাকে ২০১৪ সালে কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমদ আল-সাবাহ শান্তির দূত হিসেবেও মনোনীত করেছিলেন। গানিম ভবিষ্যৎ প্যারালিম্পিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তাঁর প্রিয় খেলা যে ফুটবল, না বললেও চলছে।
আরও পড়ুন : ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জিতবে আর্জেন্টিনা, গোল্ডেন বুট মেসির