প্রায় দুই দশক পর দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার সাফ জিতেছে বাংলাদেশ। সোমবার নেপালের কাঠমান্ডুতে স্বাগতিকদের ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী দল। দেশকে আনন্দের জোয়ারে ভাসানো সেই দলকে সংবর্ধনা জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।
আজ বুধবার দেশে ফিরবে সাফজয়ী নারী দলের সদস্যরা।তাদের বরণ করে নিতে বাফুফে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। ছাদখোলা বাসে তাদের বিমানবন্দর থেকে নেওয়া হবে বাফুফে ভবনে। সাবিনা-কৃষ্ণাদের সাফল্যে উৎসাহ দিতে দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপও ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে সংবর্ধনা ও উপহারের।
বাংলাদেশের সাফ জয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের অবদান কম নয়। ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে বদলিসহ যে ১৪ জন ফুটবলার খেলছেন, তাদের মধ্যে ১৩ জন ফুটবলারই বসুন্ধরা কিংসের। ২৩ জনের স্কোয়াডে বসুন্ধরার হয়ে খেলেন এমন ফুটবলার ছিলেন ১৫ জন। এই সাফল্যর ভাগীদার তাই বসুন্ধরাও।
বাংলাদেশে নারী ফুটবল একটা সময় বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। জাতীয় দল তো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগই পায় না। জাতীয় নারী দল গড়তে মূলত সহায়তা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। তাদের নিজস্ব ক্লাব বসুন্ধরা কিংস নারী লিগে আসার পরই মেয়েরা নতুন প্রাণ পান।
এ ব্যাপারে বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘আসলে আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রচেষ্টায় নারী দলের মধ্যে সমন্বয় আনতে পেরেছি। চেয়ারম্যান স্যার খেলাধুলা কতটা ভালোবাসেন তা কারোর অজানা নয়। ফুটবল জাগাতে তিনি যে পরিকল্পনা করেন তা মেনেই আমরা কাজ করি। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরও আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। ’
ইমরুল বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমরা যেমন পুরুষ ফুটবলে বসুন্ধরা কিংস গড়েছি। তেমনি তারই নির্দেশে নারী লিগে নাম লেখাই। তিনি বলতেন মেয়েদের মাঠে রাখতে হবে। হঠাৎ করে দু-একটি ম্যাচ খেলবে তাতে কোনো উন্নয়ন ঘটবে না। তার কথার গুরুত্ব দিয়ে বসুন্ধরা কিংস নারী লিগে অংশ নিচ্ছে। শুধু শিরোপা নয়, আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন। ’
নারী দলের ফুটবলারদের বেশির ভাগই অর্থ-কষ্টে জর্জরিত পরিবার থেকে উঠে এসেছে। তাদের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ভালো খেলার অনুপ্রেরণা দিয়েছে বসুন্ধরাই। ইমরুলের কণ্ঠেও বাজল তারই সুর, ‘বসুন্ধরা কিংসের রোডম্যাপ মেয়েদের কিছুটা হলেও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। দেখেন, এবার সাফ জাতীয় দলে ২৩ জনের মধ্যে ১৫ জনই বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়। আর ফাইনালে সেরা একাদশে খেলা ১৪ মধ্যে ১৩ জনই ছিলেন কিংসের। এ খেলোয়াড়দের আমরা বড় অর্থের পারিশ্রমিক, উন্নতমানের ট্রেনিং, সুযোগ-সুবিধা সবই দিচ্ছি। অনুপ্রেরণা জোগাতে অর্থ বড় একটা ফ্যাক্টর। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকলে নির্ভার হয়ে খেলা যায়। বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা কিংস এর সবই দিয়েছে এবং দেবে। তাই গর্বের সঙ্গে বলতে পারি বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের পেছনে বসুন্ধরা কিংস ভূমিকা রেখেছে। ’
কিংসের সভাপতি আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যার বিশ্বাস করেন মেয়েরা তাদের সাফল্য অব্যাহত রাখবে। ফুটবলে আরও উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগাতে বসুন্ধরা গ্রুপ নারী সাফজয়ী মেয়েদের বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেবে। আগামী মাসে হবে এ অনুষ্ঠান। যেখানে উপস্থিত থাকবেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এর আগে আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দিয়েছে। নারী ফুটবল উন্নয়নে বসুন্ধরা গ্রুপ কাজ করছে এবং করে যাবে। এখন অন্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সবার প্রচেষ্টায় যেন আমরা বড় স্বপ্ন দেখতে পারি। ’