হে আমার খাঁটি সোনার বাংলার, খাঁটি সোনার মানুষেরা দেখ; আমার পরিষ্কার মন ও দেহকে কিভাবে রক্তাক্ত ও জখম করেছে এর জবাব তোমাদের কাছে রেখে এসেছি।
যে দেশের জন্য আমার ঔরসজাত বাবা ইপিআর-এ কর্মরত থাকাকালীন সম্মুখ যুদ্ধে চাপাই নবাবগন্জ্ঞ বৃহত্তর রাজশাহী পাকহানাদারদের গুলিতে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, দেশকে শত্রু মুক্ত করেছেন, স্বাধীনতার জন্য স্বীয় আত্মত্যাগ করেছেন, পরাধীনতার গ্লানি থেকে রক্ষা করেছেন। আজ সে দেশের সোনার মানুষেরা, না দেখে-রেখে যাওয়া একমাত্র স্মৃতিচিহু সন্তানকে নিঃশ্বেষ করার জন্য বিন্দুমাত্র কুন্ঠাবোধ করে নাই।
এ যে, স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পাকহানাদার, রাজাকারদের চেয়েও ভয়াবহ কুৎসিত, অমানবিকতার পরিচয় বহণ করে। যেন মনুষ্যরূপী জানোয়ার। এটা কি ভাবা যায়! যে দেশের জন্য, দেশের মানুষের মুক্তির জন্য নিজ জীবন উৎসর্গ করলেন নিঃস্বার্থভাবে। আজ তাঁর রেখে যাওয়া সন্তানের নিরাপত্তা নাই।
জীবন নাশের হুমকি নয় জীবন প্রদীপ নিভিয়ে ফেলার মতো দুঃহসাহসিক কার্যসিদ্ধ করেছে। প্রশ্নবিদ্ধ জাতি কি উত্তর দিবে? রাষ্ট্র, সমাজ ও দেশে বসবাসকারী মানুষ এতে একটুও লজ্জিত হয়নি? বা হবে না? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাহলে কি? দুষ্টের পালন-শিষ্টের দমন নীতিতে উপনিত, চলমান সরকার বা রাষ্ট্র ব্যবস্থা!
বিচার ব্যবস্থাই বা কোথায়া? আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও কী ননীর পুতুলের রূপ ধারণ করেছে? তা না হলে এতসব প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও দিনের আলোর মতো, রাতের ধ্রুব তারা কিংবা পূর্নিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল দৃশ্যমান আতশী কাঁচের গ্লাস বিহীন দৃশ্য গোচরীভূত অথচ সরকার সমর্থকগোষ্ঠী বলে অপরাধ করেও অবাদে নিরাপদে নিশ্চিন্তে বুক ফুলিয়ে, কেউ লুঙ্গি উঁচিয়ে আবার কেউ প্যান্টের পার্শ্ব পকেটে হাত ঢুকিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
আর হতভাগা শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দ্বৈত নাগরিক (ব্রিটিশ) এবং প্রথম শ্রেণির অধিবাসী ও আইনজীবী হওয়া স্বত্তেও নূন্যতম স্বাধীনতা, নিরাপত্তা, ন্যাকারজনক হামলার তদন্ত ও বিচার প্রাপ্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত। সরকারের কর্ণধারদের মধ্যে এমন কোনো ব্যাক্তি কি নাই, যে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারেন? জাতি আজ স্বাধীনতা অর্জন করেছে ৫২ বছর, দলের ছত্রছায়ায় সরকারের, রাষ্ট্রের, জাতির ভাবমূর্তি ধূলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে-ব্যাক্তি স্বার্থের জন্য, এমন কি বহির্বিশ্বেও সরকারের সম্মান ক্রমাগত পদদলিত হচ্ছে।
টনক নড়বে কখন! যখন আর শেষ সম্বল টুকোও থাকবে না? পিছনে ফিরে তাকালে দেখা যাবে-ইতিহাস সাক্ষী, বাংলার স্বাধীনতার সূর্য প্রথম অস্তমিত হয়েছিল ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন মীর জাফরের যড়যন্ত্রের কারণে নবাব সিরাজ-উদ -দৌলার পতনের মাধ্যমে,এর একমাত্র কারণ ব্যাক্তির হীনম্বার্থ চরিতার্থের জন্য।
অনেক ঘটনা অতিক্রম করে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার একনিষ্ঠ নায়ক, আহবায়ক ভঙ্গুর অবকাঠামো সোনার বাংলাদেশ প্রসূত ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর কেবল হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে চলতে শুরু করার সময় বিশ্বাস ঘাতক- ঘরের শত্রু বিবিসনের হাতে স্বপরিবারে নির্মম ভাবে নিহত হন।
এই কালিমা কি দিয়ে জাতি মুছে ফেলবে ইহা আমান জানা নাই। এমন হাজারও কলঙ্কিত অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। ইতিহাস কখনো কাউকে ক্ষমা করে না। প্রাকৃতিক নিয়মে ঝরের পূর্বাবাস আগে ভাগেই পরিলক্ষিত হয়, যা কিনা মুহূর্তেই সব শেষ করে দেয়। এমনকি বিদ্যমান অবস্থার আকৃতি-প্রকৃতির আমুল পরিবর্তণ করে দেয়।সে ক্ষেত্রে পূর্ব সতর্কাবস্থা অবলম্বনে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবার সম্ভাবনা থাকে। তাইতো বলতে হয় সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়।
সময় কাউকে বলে কয়ে আসে না। আগাছা-পরগাছা নিধন না করলে, মূল গাছ বাঁচানো যাবে না। আজ বাংলার মাটিতে আগাছা-পরগাছায় ভরে গেছে। নইলে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের নূন্যতম অধিকার নাই, তার বাবার আত্মত্যাগে অর্জিত ভূমিতে অবাদ চলাফেরা ও বাক স্বাধীনতার।
পূর্বপরিকল্পিত ভাবে নির্মম হত্যার উদ্দেশো আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অঝোর ধারায় রক্তাক ও যখম হয়ে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। অপরাধীদের বিনা বিচারে অবাদ বিচরণ দেখে লজ্জায় মুখ লুকানোর ভাষা হারিয়ে ফেলে- ঠিক ততোধিক, ঘৃণাও সমোধিক, আফসোস শুধু সোনার বাংলার, সোনার মানুষের জন্য; তাদের স্বস্তি কোথায়! বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ কর্মী, মনে-প্রাণে দেশ প্রেমিক মহানায়ক শেখ মুজিবুরের আদর্শে অটুট বিশ্বাসী এবং বাবার সাহসী ভূমিকাকে লালন করে, জন্ম এতিম সন্তানটি নিরবে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে প্রকৃতির কাছে সস্তিও শান্তির আহ্বান জানায়।
সর্বশেষ এটাই বলতে চাই, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, যে কারণে সাত সাগর তের নদী পাড়ি দিয়ে এসেছি প্রবাসে, কারণ একটাই সোনার বাংলা তোমার মুখে হাসি দেখব বলে😅।