সোমবার হঠাৎ করেই আলোচনায় বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ভারতের একটি ওয়েব পোর্টাল ক্রিকট্র্যাকারের সূত্র ধরে দেশের একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রচারিত হয়, বাংলাদেশের শীর্ষ ধনী ক্রিকেটার মাশরাফি। ৫১০ কোটি টাকার মালিক তিনি। সে খবর খুব দ্রুতই ভাইরাল হয়ে যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তো অনেকে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ককে নিয়ে টিপ্পনী কাটতেও ছাড়েননি।
মাশরাফি নিয়ে সমালোচনার কারণ, হুট করেই কীভাবে এতো টাকার মালিক বনে গেলেন তিনি! কেননা ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনের সময় হলফনামার অর্থ বিবরণীতে মাশরাফির দেওয়া সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা (৫০ তোলা স্বর্ণ বাদে)। সেই হিসাব টেনেই বলা হচ্ছিল, এমপি হওয়ার ৪ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মাশরাফি!
যদিও ক্রিকট্র্যাকার এই প্রতিবেদন যে সম্পূর্ণ ভুয়া তা শুরুতেই বোঝা যাচ্ছিল। কেননা এ তথ্যের বিশ্বাসযোগ্য কোনো সূত্র তারা দেখাতে পারেনি। ওই প্রতিবেদনের সূত্র সম্পর্কে লেখা হয়েছে ’According to multiple websites.’ অর্থাৎ, এটি একটি নাম পরিচয়হীন সূত্র। সম্পদের এই পরিমাণ কী পদ্ধতিতে বের করা হয়েছে তারও সুস্পষ্ট কোনো বর্ণনা নেই। ফলে সহজেই বিশ্বাসযোগ্যতা হারায় এ প্রতিবেদনটি।
কিন্তু সে সব বিবেচনায় না এনে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ওয়েব পোর্টাল এ ব্যাপারে খবর করে। বিষয়টি চোখে আসতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হন মাশরাফি। রাত ১২টার কিছুক্ষণ পর নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে মাশরাফি বলেন, ‘ভিনদেশি কোন হাবিজাবি সস্তা ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ তাদের মনগড়া যা ইচ্ছা লিখতেই পারে। সে সবকে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাদেরকে সূত্র ধরে নিয়ে যখন আমাদের দেশের নানা ওয়েবসাইট যা ইচ্ছা তাই লিখে দেয়, তখন দুঃখ লাগে বটে!’
এরপর যারা এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর না নিয়েই সংবাদ ছাপিয়েছে, তাদের কড়া সমালোচনা করেন মাশরাফি। তিনি লেখেন, ‘দেশের একজন মানুষকে নিয়ে লেখা হচ্ছে, আপনারা চাইলেই তো খোঁজ-খবর নিতে পারেন। তা না করে উল্টো তাদের উদ্ভট নিউজের সূত্র ধরে আপনারা নিউজ করছেন। সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম চর্চা না হয় করলেন না, অন্তত নিজেদের এতটা সস্তা হিসেবে তুলে ধরতেও তো বিবেকে নাড়া দেওয়া উচিত। ’
উল্লেখ্য, ক্রিকট্র্যাকার ভারতের ক্রিকেটভিত্তিক একটি ওয়েব পোর্টাল। সেই পোর্টাল অবশ্য এরই মধ্যে তাদের সেই বিতর্কিত প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলেছে। সরিয়ে ফেলা হয়েছে দেশে সেই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে হওয়া প্রতিবেদনগুলোও।