রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
পটুয়াখালীতে মাদ্রাসা থেকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে কিশোরকে অপহরণ। ইজতেমা ময়দানে নিহতের ঘটনায় জামায়াত আমিরের শোক জেলা জজের ড্রাইভার পরিচয়ে অবৈধভাবে জমি দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন পটুয়াখালীতে হত্যার উদ্দেশ্য সাংবাদিককে বেধরক মারধর থানায় মামলা। কসম পাচার কালে মূল হোতা আটক গলাচিপায় চেতনানাশক দ্রব্য ব্যবহার করায় মা-ছেলে অসুস্থ  গলাচিপায় পাচারের সময় ১৭ কচ্ছপসহ ব্যবসায়ী আটক লালমনিরহাটে আ.লীগ নেতা সুমন খান ও স্ত্রীর ব্যাংকে ২৩৭ কোটি টাকা, অর্থপাচার মামলা গলাচিপায় পুলিশের মধ্যস্থতায় আড়ৎদারের টাকা ফেরত দিয়েছেন ফল ব্যবসায়ী গলাচিপায় জেলেদের মাঝে চাল বিতরন

রাসুল (সা.)-এর সুউচ্চ মনোবল

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২
  • ৭৩ সময় দর্শন

রাসুল (সা.) মাত্র ১১ বছর বয়সে ‘হিলফুল ফুজুল’ প্রতিষ্ঠা করে জাহিলি সমাজের চিত্র পাল্টে দিয়েছিলেন। নববী জীবনের বাঁকে বাঁকে গভীরভাবে চিন্তা করলে রাসুল (সা.)-এর সুউচ্চ

মনোবল, উদ্যমতা ও শক্তিমত্তার বিষয়টি প্রতিভাত হয়। শারীরিক শক্তি, উঁচু হিম্মত, সুদৃঢ় মনোবল, বিপদাপদে পাহাড়সম ধৈর্যধারণ, লাগাতার রোজা রাখা, নামাজে আল্লাহর সামনে

রাত জেগে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় শক্তিতেই তিনি ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উপমা।

জীবন সায়াহ্নে এসেও বয়সের ভারে তাতে কোনো ভাটা পড়েনি। ওই সময়ও তিনি সুউচ্চ মনোবল ও শক্তিবলে টগবগে তারুণ্যের মতোই ছিলেন উদ্দীপ্ত।
১. নবুয়তের সূচনালগ্নে আল্লাহপ্রদত্ত নবুয়ত লাভ করার পরপরই রাসুল (সা.)-এর ওপর নেমে এলো বিপদের পাহাড়। আল্লাহর দ্বিনের দাওয়াতের বিরুদ্ধে মক্কার কুরাইশ নেতৃবৃন্দ জোটবেঁধে দাঁড়িয়ে গেল বাধার প্রাচীর হয়ে। গোত্রের সিংহপুরুষ চাচা আবু তালেবও ভড়কে গেলেন। বাধ্য হয়ে ভাতিজা মুহাম্মদ (সা.)-কে বলল, ‘আমার ওপর এত ভার আমি সইতে পারছি না। তুমি কুরাইশদের সঙ্গে একটি আপসরফা করে চলো। রাসুল (সা.) একটুও ঘাবড়ে গেলেন না। কলেমার দাওয়াতের ব্যাপারে কাফিরদের সঙ্গে সমঝোতায় তিনি সম্মত হলেন না; বরং দ্বিগুণ তেজে, দরাজ কণ্ঠে সুস্পষ্ট বলে দিলেন, ‘ওরা আমার এক হাতে চন্দ্র আরেক হাতে সূর্যকেও এনে দেয়, তবু আমার পথ থেকে এক চুল পরিমাণও পিছে সরব না। ’ প্রতিকূল মুহূর্তেও রাসুল (সা.)-এর  অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার আকাঙ্ক্ষা ছিল সুদৃঢ়।

২. খন্দকের যুদ্ধে মুসলমানরা তীব্র শীতের এক সকালে পরিখা খনন করছিলেন। তাদের সামনে একটি বড় পাথর ঠেকল। মুসলমানরা এটা সরাতে অপারগ হয়ে পড়লেন। তারা রাসুল (সা.)-এর কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করলে, তিনি বলেন, ‘আমি আসছি। ’ রাসুল (সা.) দাঁড়ালেন। ক্ষুধার তাড়নায় পেটে তখন পাথর বাঁধা ছিল। তিন দিন ধরে তিনি কোনো খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেননি। তিনি কুঠার হাতে পাথরে আঘাত করলেন। বালুর ঢিবির মতো পাথরটি গুঁড়া গুঁড়া হয়ে গেল। (বুখারি, হাদিস : ৪১০১)

তিনি একে একে তিনবার কুঠার চালান, দ্বিতীয়বার কুঠার চালানোর সময় রাসুল (সা.)-এর পবিত্র জবানে এই কবিতা আবৃত্তি করেন, (অর্থ) ‘আল্লাহর কসম! আমি এখান থেকেই মাদায়েন এবং তার শুভ্র প্রাসাদ দেখতে পাচ্ছি। ’ ক্ষুধার্ত অবস্থায়ও রাসুল (সা.)-এর দেহশক্তি  কত প্রবল ছিল!
৩. তায়েফ গমন করেছেন এমন সময়, যখন রাসুল (সা.) দুঃখের অথৈ সাগরে নিমজ্জমান। অভিভাবকত্বের সর্বশেষ ছায়া চাচা আবু তালেবের ইন্তেকাল। প্রিয়তমা জীবন সঙ্গিনীর পরলোকগমন। ওই সময় এমন একজনকে কাছে পেলেন না, একটু সহানুভূতি দেখানোর মতো। তবু দ্বিন প্রচারের সার্থে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ছুটে গেলেন তায়েফ নগরে। দুষ্টু কাফিরদের যন্ত্রণায় সেখানেও পেলেন না একটু স্বস্তি। একবুক কষ্ট নিয়েই ফিরতে হলো। এ ঘটনা রাসুল (সা.)-এর মানসিক ও আত্মিক শক্তি কত দৃঢ় ছিল, এর প্রমাণ বহন করে।

৪. রাসুল (সা.) একবার পাহাড়ের মতো উঁচু ভূমিতে এক পানি পানের স্থানে অবস্থান করছিলেন। উমর (রা.) একটি খেজুরের ডালে ভর করে সিঁড়ির মতো বেয়ে পানি পানের স্থানে আরোহণ করলেন। উমর (রা.) বললেন, ‘আমি খেজুরগাছের ডাল ধরে নেমেছি আর রাসুল (সা.) কোনে কিছু ধরা ছাড়াই নামলেন, যেন তিনি মাটির ওপর হাঁটছেন। ’ এ ঘটনা নববি হিজরিতে, নবীজি (সা.)-এর শেষ জীবনে ঘটেছে। এর থেকে অনুমান করা যায় জীবনের শেষ পর্যন্ত সেই শক্তি মনোবল স্থায়িত্ব ছিল। রাসুল (সা.) সেই পানের স্থান থেকে নিচে নামলেন।

কিন্তু তিনি কোনো ডালের সাহায্য ছাড়াই এমনভাবে নামলেন, মনে হচ্ছিল তিনি সমভূমিতেই হাঁটছেন। আর ওদিকে উমর (রা.) ডাল ধরে নামছিলেন যেন মনে হচ্ছিল এই যেন পড়ে যাচ্ছেন। এটা উমর (রা.)-এর চাক্ষস দর্শনের বর্ণনা। যা রাসুল (সা.)-এর শক্তি ও উদ্যমের বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয়। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘দুর্বল বান্দার চেয়ে শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে উত্তম ও অধিক প্রিয়। আর কল্যাণ উভয়ের মধ্যেই রয়েছে। তোমার যা উপকার আসবে তা কামনা করো। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। অক্ষমতা প্রকাশ করো না। যদি তোমার কোনো বিপদ আসে তাহলে এ কথা বলো না, যদি এমন করতাম! বরং এ কথা বলো—আল্লাহ সব কিছু নির্ধারণকারী। তিনি যা চান তা-ই করেন। যদি শব্দটি শয়তানের দরজা খুলে দেয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৬৬৪)                                             লেখক : খতিব, মদিনা জামে মসজিদ, রায়পুরা, নরসিংদী।

আরো পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পড়ুন এই বিভাগের আরও খবর

Chairman Md. Azadul Islam. CEO Md. Amir Hossain. Editor S, M, Shamim Ahmed. Managing Director Md. Lokman Mridha, office House # 43 ( Ground Flooor ) 47 Road No. 30, Mirpur, Dhaka Division - 1216

 

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71