বছরের শ্রেষ্ঠ মাস পবিত্র রমজানুল মোবারক। পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার মাস এই রমজান। এ মাসে একটি রাত রয়েছে, যা এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে পবিত্র এই মাস মানবজাতির জন্য সবিশেষ নিয়ামত ও অনুকম্পা।
এই মাসে মুসলিম উম্মাহ অন্য মাসের তুলনায় বহু গুণে বেশি আমল করে থাকে। সারা বছর মুসলমানরা এই মাসের জন্য অপেক্ষা করেন।
রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমজান- বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোযা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরয করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। দুষ্ট শয়তানদের এ মাসে শৃংখলাবদ্ধ করে দেয়া হয়। এ মাসে আল্লাহ কর্তৃক একটি রাত প্রদত্ত হয়েছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে (মহা কল্যাণ থেকে) বঞ্চিত হলো। ’ (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৩)
বেশি বেশি দোয়া ও কান্নাকাটি করা
হাদিসে এসেছে, ইফতারের মূহূর্তে আল্লাহ রাববুল আলামিন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমাদানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে। (আল-জামিউস সাগির, হাদিস : ৩৯৩৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, রমজানের প্রতি দিবসে ও রাতে আল্লাহ তাআলা অনেককে মুক্ত করে দেন। প্রতি রাতে ও দিবসে প্রতি মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। ’ (সহিহ আত-তারগিব ওয়াত তারহিব : ১০০২)
লাইলাতুল কদর খোঁজা
আল-কোরআনের ঘোষণা, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। ’ (সুরা কদর, আয়াত : ০৪)
হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াব পাওয়ার আশায় ইবাদাত করবে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। ’ (সহিহ আল-বুখারি, হাদিস : ৩৫)
এ রাত লাভ করতে সক্ষম হওয়া বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। এক হাদিসে আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) অন্য সময়ের তুলনায় রমজানের শেষ দশ দিনে অধিক হারে পরিশ্রম করতেন। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৭৫)
লাইলাতুল কদরের দোয়া : আয়েশা (রা.) বললেন, হে আল্লাহর নবী! যদি আমি লাইলাতুল কদর পেয়ে যাই— তবে কী বলব? আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘বলবে- اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ كريمٌ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফা’ফু আন্নি।
অর্থাৎ : হে আল্লাহ, আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। ’ (সুনান আত-তিরমিজি : ৩৫১৩)
ইফতার করানো
অন্যকে ইফতার করানো একটি বিরাট সওয়াবের কাজ। প্রতিদিন কমপক্ষে একজনকে ইফতার করানোর চেষ্টা করা দরকার। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না। ’ (সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস : ১৭৪৬)
তাই মুসলমান হিসেবে সবার উচিত, পবিত্র এ মাসকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা। এ মাসে ইবাদত-বন্দেগি বেশি বেশি করা। রমজানে আল্লাহর কাছে ক্ষমাও চাইতে হবে মন থেকে।