মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৩০ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জ সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কয়লা পাচাঁর: ২টন জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২০
  • ৫৩৮ সময় দর্শন

সুনামগঞ্জের লাউড়গড়,চাঁনপুর,টেকেরঘাট,বালিয়াঘাট,চাঁরাগাঁও ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত এলাকা দিয়ে নাটকীয় ভাবে চলছে চোরাচালান। বিজিবি অভিযান চালিয়ে ২ মে.টন চোরাই কয়লা আটক করেছে। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী চিহ্নিত চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে মাদক,কয়লা ও হুন্ডিসহ একাধিক চাঁদাবাজি মামলা থাকার পরও গ্রেফতার করা হচ্ছেনা।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়- সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর জেলার তাহিরপুর উপজেলার চাঁরাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে ৬-৭দিন অবৈধ কয়লা ও মাদক পাচাঁর বন্ধ রাখে বিজিবি। কিন্তু গত ২১ শে অক্টোবর রাত ১২টায় চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা এফএস জিকরুলের সহযোগীতা সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়া ও বাবুল মিয়ার নেতৃত্বে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৭ মে.টন কয়লা পাচাঁর করার অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে একই সময়ে পাশর্^বর্তী বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট ও লাকমা চাকমাহাটি এলাকা দিয়ে ইয়াবা মামলার আসামী সোর্স কালাম মিয়া ১০ মে.টন চোরাই কয়লাসহ বিপুল পরিমান মদ,ইয়াবা ও কাঠ,লাকড়ি,বরশির চিপ পাচাঁর করে। পরে পাচাঁরকৃত কয়লাসহ অন্যান্য মালামাল লালঘাট গ্রামের চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী শহিদুল্লা ও খোকন মিয়া ক্রয় করে এবং শহিদুল্লার বাড়ি সংলগ্ন হাওরের পারে নৌকায় বোঝাই করে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার ব্রিজ সংলগ্ন মনতলা নিয়ে বিক্রি করে।

পরদিন সকালে এখবর এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর ১মে.টন অবৈধ কয়লা জব্দ করে চাঁরাগাঁও ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। এঘটনার পর আবার ১দিন কয়লা ও মাদক পাচাঁর বন্ধ থাকে। এরপর দিন ২৩ শে অক্টোবর শুক্রবার রাত ২টায় আবারও বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে ভারত থেকে ১০ মে.টন কয়লা পাচাঁর করে সোর্স রমজান মিয়া ও বাবুল মিয়া।

এঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর আবারও ১ মে.টন চোরাই কয়লা আটক করে বিজিবি। তবে পাচাঁরকৃত  প্রতি নৌকা অবৈধ মালামাল থেকে পুলিশ,সাংবাদিক ও বিজিবির নামে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা নিয়েছে সোর্সরা। অন্যদিকে লামাকাটা ও জংগলবাড়ি এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী লেংড়া জামাল ওপেন কয়লা,মাদক ও গরু পাঁচার করলেও তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা। অপরদিকে টেকেরঘাট সীমান্তের পুলিশ ক্যাম্প ও বিসিআইসির খনি প্রকল্প এলাকাসহ বড়ছড়া ডাক বাংলার পশ্চিম দিক ও ভাংগারঘাটসহ রজনীলাইন এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী কামাল মিয়া ও ফিরোজ মিয়ার নেতৃত্বে চোরাই পথে ভারত থেকে কয়লা ও মাদক পাচাঁর করা হচ্ছে।

এজন্য বাংলাদেশ থেকে মাছ,মাংস ও শাক-সবজি ভারতে পাঠানো হচ্ছে। অন্যদিকে চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া,গারো ছড়া,রাজই,কড়ইগড়া ও বারেকটিলা এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মাদক মামলার আসামী আবু বক্কর তার ছেলে আলমগীর ও রফিকুল মিয়ার নেতৃত্বে প্রতিদিন ওপেন মদ,গাঁজা,বিড়ি,ইয়াবা পাচাঁর করা হচ্ছে। বিজিবি মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় মদ জব্দ করে। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী ও চাঁদাবাজদের কখনোই গ্রেফতার করেনা।

এছাড়া লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী,সাহিদাবাদ,পুরান লাউড়,শাহ-আরোফিন মোকাম এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী নুরু মিয়া,আমিনুল,নাজিম মিয়া,জজ মিয়া,নবীকুল ও জসিম মিয়ার নের্তৃত্বে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে কয়লা,গাছ,মদ,গাঁজা,ইয়াবা,বিড়ি ও গরু পাঁচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি কয়লা নিয়ে বিজিবি ও এলাকাবাসীর মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। তখন ১১ রাউন্ড গুলিবর্ষন করেছে বিজিবি। এঘটনায় নারী,শিশু ও বিজিবি সদস্যরাসহ ১৫জন আহত হয়। পরে শালিসের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়। এছাড়া কয়লা ও পাথর পাচাঁর করতে গিয়ে বিএসএফের তাড়া খেয়ে যাদুকাটা নদীতে ডুবে অনেক চোরাচালানীর মৃত্যু হয়েছে।

কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলম মুখ খুলতে নারাজ। তার সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে বারবার কল করার পর শুধু ব্যস্ত পাওয়া যায়,তিনি ফোন রিসিভ করেন না। এব্যাপারে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ বলেন- সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজির সাথে পুলিশ প্রশাসনের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আর সোর্স পরিচয়ধারীদের বিষয়ে বিজিবির সাথে কথা হয়েছে তারা বলেছে বিজিবির কোন সোর্স নাই,তাই এব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। তবে সীমান্ত চোরাচালন ও চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য সবার সহযোগীতা প্রয়োজন। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব।

সীমান্ত এলাকার চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে সরকারে রাজস্ব বৃদ্ধি করার জন্য বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ ও র‌্যাবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুদৃষ্টি কামনা করছেন ৩ শুল্কস্টেশনের বৈধ কয়লা ব্যবসায়ীরাসহ সবস্থরের জনসাধারণ।

আরো পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পড়ুন এই বিভাগের আরও খবর

Chairman Md. Azadul Islam. CEO Md. Amir Hossain. Editor S, M, Shamim Ahmed. Managing Director Md. Lokman Mridha, office House # 43 ( Ground Flooor ) 47 Road No. 30, Mirpur, Dhaka Division - 1216

 

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71