পটুয়াখালীর বাউফলে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ে করেছিলেন ৬০ বছর বয়সী কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। শুক্রবার বাদজুমা ৫ লাখ টাকা কাবিনে ওই কিশোরীকে বিয়ে করে চেয়ারম্যান।
কিন্তু বিয়ের একদিন পরেই চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে তালাক দিয়েছেন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরী। যে কাজী বিয়ে পড়িয়েছেন তাঁর মাধ্যমে গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে পরিবারের কাছে ফেরে কিশোরী।
তালাকের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চত করেছেন, ওই কিশোরী ও তার বাবা। চেয়ারম্যান নিজেও মুঠোফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাহীন হাওলাদার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
প্রেমের টানে ওই ইউনিয়নের নারায়ণপাশা গ্রামের রমজান (২৫) নামের এক যুবকের হাত ধরে বাড়ি ছেড়েছিল ওই কিশোরী। বিষয়টি জানার পর কিশোরীর বাবা নালিশ দিয়েছিলেন চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান সালিসে বসার পর মেয়েটিকে পছন্দ হয়ে যায়। পরে তিনি ওই কিশোরীকে (১৪) বিয়ে করেন।
শনিবার ওই কিশোরী বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করতে। কিন্তু বিয়ে করতে হয়েছে চেয়ারম্যানকে।
আমি এক রাত চেয়ারম্যানের বাসায় থাকলেও কোনোভাবেই তাঁকে আমি স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারিনি। চেয়ারম্যান তা বুঝতে পেরে তালাক দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।’
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, সালিস বৈঠকে মেয়ের পছন্দের ছেলের কাছে মেয়ের বাবা কোনোভাবেই বিয়ে দিতে রাজি ছিল না।
তাই কাজি ডেকে বিয়ে করেছিলাম। কোনো প্রভাব কিংবা জোর করিনি। যেহেতু মেয়ে বিয়েটা ভালোভাবে মেনে নিচ্ছিল না। তাই যিনি বিয়ে পড়িয়েছেন তাঁর মাধ্যমে মেয়েটি আমাকে তালাক দিয়েছে এবং তাকে তাঁর বাবার হাতে তুলে দিয়েছি।
স্থানীয় লোকজন ও মেয়েটির পরিবারের ভাষ্য, কাজি ডেকে শুক্রবার দুপুরে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান।
বিয়ের কাবিননামায় মেয়েটির জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল। কিন্তু বিদ্যালয়ে থাকা জন্মনিবন্ধন ও পঞ্চম শ্রেণি পাসের সনদ বলছে, মেয়েটির জন্ম ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান চেয়ারম্যান। তবে বাড়িতে তাঁর প্রথম স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা ছিলেন না।
এদিকে প্রেমিকাকে হারিয়ে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে প্রেমিক রমজান বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন তরুণ রমজান বলেন, ‘ওকে আমার কাছে এনে দেন। আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না।’