আশায় বুক বেঁধে ১৭ দিন হাসপাতালে থাকার পরও শিশুটির অস্ত্রোপচারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত গতকাল রোববার নবজাতকের বাবা-মা হাসপাতাল ছেড়ে নিজ দায়িত্বে সন্তানকে নিয়ে তাঁদের বাড়ি দিনাজপুরের কাহারোলে চলে যান।
নবজতকের দিনমজুর বাবা গোলাম রব্বানী সন্তানের চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। সহায়তা পাঠানোর জন্য বিকাশ ০১৩১৮-৯০৬৭২৮ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
গত ৪ জুন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌরশহরের খানসমা রোডে অবস্থিত বীরগঞ্জ ক্লিনিকে চার হাত ও চার পা বিশিষ্ট এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন গোলাম রব্বানীর স্ত্রী রুনা লায়লা।
স্বাভাবিকভাবেই সন্তান প্রসব করলেও অদ্ভুত নবজাতকটিকে ওইদিনই রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম তলার শিশু সার্জরি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
চিকিৎসাধীন থাকাকালে বেশকিছু পরীক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু ১৭ দিনেও কোনো অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেননি সেখানকার চিকিৎসকরা। তার কোনো উন্নতিও হয়নি।
নবজাতকের বাবা দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের মুকন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর গোলাম রব্বানী। গতকাল ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় তিনি বলেন, ‘ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাড়ির তিনটি ছাগল বিক্রি করেছি।
এছাড়া একজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছি। সন্তানকে নিয়ে যখন রংপুর মেডিক্যালে আসি তখন শ্বশুরের কাছ থেকে এবং নিজের জমানো ২৫ হাজার টাকা নিয়ে আসি।
সব টাকা চিকিৎসায় শেষ হয়েছে। তবে ডাক্তাররা সঠিকভাবে ছেলেকে দেখেন নাই। চিকিৎসাও ঠিকমতো হয় নাই।
হাসপাতালের চিকিৎসক দুই মাস পর যোগাযোগ করতে বলেছেন উল্লেখ করে গোলাম রব্বানী বলেন, দুই মাস পরে কি হবে জানি না। যদি অপারেশন করাতে হয় তাহলে টাকা পাব কোথায়! অদ্ভুত এই ছেলেকে নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি।
নবজাতকের বাবার অভিযোগ, হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা নেই। তাই ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে গেলাম।’ তবে যাওয়ার সময় ঋণের বোঝা আর দীর্ঘশ্বাস নিয়েই ফিরে গেছেন তাঁরা।
এ ব্যাপারে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের প্রধান ডা. বাবলু কুমার সাহা বলেন, ওই নবজাতকের এই অঙ্গগুলোকে পরগাছা জাতীয় অঙ্গ বলে। অপারেশনের মাধ্যমে এগুলো অপসারণ করা সম্ভব। তবে এই ক্ষেত্রে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন।