লালমনিরহাটের আদিতমারীতে শুক্কুর আলী নামে এক ব্যাক্তির এক একর ৩ শতক জমির মধ্যে ৪শতাংশ জমি অন্যায়ভাবে দখল করে দির্ঘদিন ধরে ভোগ করে আসছে সায়েদ আলী (৭০) নামে এক ব্যাক্তি।
শুধু জমি দখলই নয়, দখলিয় সেই জমির সীমানায় বাঁঁশের এবং বড়ই গাছের বেড়া দিয়ে শুক্কুুুর আলীর জমিতে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই সায়েদ আলীর বিরুদ্ধে।
খাস খতিয়ানে এবং কাগজে কলমে জমির মালিক শুক্কুর আলীর নাম থাকলেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই সায়েদ আলী শুধু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ওই ৪শতাংশ জমি দখল করে ভগ করে আসছে।
এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ হলেও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতার কারনে বিষয়টি দির্ঘদিন ধরে মিমাংসা হচ্ছে না। সায়েদ আলীর নিকট মোটা অংকের সুবিধা নেয়ার কারনেই দির্ঘদিন ধরে বিষয়টি মিমাংসা হচ্ছে না বলে স্থানীয়রা জানান। ওই এলাকায় কয়েকশ পরিবারের সেখানে হাজার হাজার একর জমি আছে। সেই লোক গুলো দীর্ঘদিন ধরে ওই শুক্কুর আলীর জমির উপর দিয়েই বিভিন্ন ফসল বাড়িতে নিয়ে আসা এবং স্ব স্ব জমিতে যাতায়াত করেন।
সেই দিক দিয়ে শুক্কুর আলীর জমিটি তারা রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। সম্প্রতি রাস্তাটির পশ্চিম পাশে বাঁশের এবং বড়ই কাটার বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। একই দিকে নামুরীর বিলের বাধ দেয়া আছে। সেই বাধের উপর দিয়ে সকলে যাতায়াত করেন এবং এই বাঁধের নিচেই সেই জমি।
এ বিষয়ে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শুক্কুর আলী। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের মুশর দৈলজোড়ের নামুরীর বিল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকেলে সরেজমিনে ঘটনা স্থলে গেলে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
বাঁশের বেড়ার দেয়ার পর জমিতে যাতায়াতের জন্য রাস্তাও দেয়া হয় কিন্তু সেই রাস্তা দিয়ে মাথায় করে কোন ফসল নিয়ে আসা তো দুরের কথা কোন মানুষ ঢুকতে বা বাহির হতে পারে না। যদি কেউ ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে অবশ্যই তাকে খালি গায়ে কাত হয়ে অনেক কষ্টে প্রবেশ করতে হবে।
আব্দুল মান্নান নামে এক বৃদ্ধ জানান, জন্মের পর থেকে জেনে আসছি, এই এলাকার সকল খাসজমির ওপর দিয়ে সবাই অবাধে যাতায়াত করেছে। আমরা একসময় গরুর গাড়ি নিয়ে যেন কোন জমি ব্যবহার করে ফসলাদি বাড়ি আনতাম।
কিন্তু দুই বছর আগে রাস্তা ঘেঁষে আব্দুস সায়েদ আলী গাছ লাগিয়ে ও বাাঁশের বেড়া দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় জমিতে শুকিয়ে যাওয়া ভুুুট্টা নিয়ে আসতে পারছেন না শুক্কুুুর আলী। এরপর সম্প্রতি ওই রাস্তা সম্পূর্ণ নিজেদের দাবি করে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।
পরে স্থানীয় লোকজনের কথায় বেড়ার মাঝখানে সামান্য একটু মনে হয় একটি মুরগী যাওয়ার মতো রাস্তার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য ছামিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি মীমাংসার অনেক চেষ্টা করেও পারা যায়নি। আমাদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক সাহেব বিষয়টির মীমাংসার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সায়েদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তিনি বাড়িতে থাকেন না। তা ছাড়া তার মুঠোফোনে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। চেয়ারম্যান আজিজুল হক প্রধান বিষয়টি মিমাংসার জন্য তার বাড়িতে একবার বসেছিলেন বলে জানান শুক্কুর আলী।
কিন্তু সেখানে এক তরফা সিদ্ধান্ত হওয়ায় তিনি সেই সিদ্ধান্ত না মেনে আইনের আশ্রয় নেন। সারপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক প্রধান জানান, দুই পক্ষকে নিয়ে একবার বসা হয়েছিল।
সেদিন কি কারনে দুই পক্ষ সিিদ্ধান্ত মেনে নিলেন না তাাা জানা নেই। এরপরেও আরেকবার বসার জন্য উভয়পক্ষকে বলা হয়েছে খুব শিঘ্রই দিন তারিখ ঠিক করে মিমাংসার জন্য আবার বসা হবে। আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, চেয়ারম্যান সাহেবকে মীমাংসা করতে বলেছি। তিনি বিষয়টির সমাধান করতে না পারলে সরেজমিন গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।