সাতক্ষীরার ব্রান্ড বিখ্যাত ৫ টন হিমসাগর আম শুক্রবার (২১ মে) ইটালির রোমে রপ্তানি হচ্ছে। মেসার্স ইসলাম ট্রেডার্স এর মাধ্যমে এই আম বিদেশে যাচ্ছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাধবকাটি বলাডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমানের বাগান থেকে এই আম সংগ্রহ করা হয়।
১৪টি বায়ার কোম্পানি জেলার প্রান্তিক পর্যায় থেকে এসব আম সংগ্রহ করছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রপ্তানিকৃত আমের জন্য সাড়ে ৩শ’ চাষিকে আলাদা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল উপস্থিত থেকে রপ্তানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং বাগান পরিদর্শন করে আমের গুনগত মান দেখেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরুল ইসলাম, কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, জেলা বিপণন কর্মকর্তা সালেহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম, উত্তরণ পরিচালক শহিদুল ইসলাম, সফল প্রকল্পের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া’র প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় ৪হাজর ১শ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে ৫০ টন বিভিন্ন জাতের আম বিদেশে রপ্তানির কথা রয়েছে।
আম চাষি এসএম লিয়াকত হোসেন, রপ্তানিকারকের প্রতিনিধি শাওন হোসেন ও আম প্রস্তুত কারক শ্রমিকরা জানান, এবার মৌসুমী বর্ষা না হওয়ায় আমের সাইজ একটু ছোট হয়েছে। তার পরও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েননি।
গত বছর ২০ মে আম্পানের কারণে জেলার আম চাষিরা দারুণভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত যদি কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেয় তাহলে জেলার চাষিরা এবার হয়তো গত বছরের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানায়, প্রথম দিনেই এনএইচবি কর্পোরেশন ও তাশফিক ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৫ টন হিমসাগর আম ইতালির রোমে যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আরও ল্যাংড়া ও আমরুপালি আমও রপ্তানি হবে।
রপ্তানিকারকরা নায্যমূল্যে আম ক্রয় করে সকল প্রস্তুতি শেষে বিদেশে পাঠাচ্ছেন। ফলে চাষি ব্যবসায়ী উভয় লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশে রেমিটেন্স আসছে। স্বাদে গুনে ও মানে সেরা হওয়ায় এ জেলার আম ব্রান্ড হিসেবে বিদেশে যাচ্ছে এবং তা অব্যহত থাকবে বলে জানালেন জেল প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল।
এরআগে গত ৯ মে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও এফএও এর যৌথ কারিগরী সহায়তায় জার্মানীতে রপ্তানীর উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরা ছাড়ে এক হাজার কেজি গোবিন্দভোগ জাতের আম।
প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার মুম্বাই, গোবিন্দভোগ, গোপালভোগসহ আগামজাত আম ১ মে, হিমসাগর আম ২১ মে ও ল্যাংড়া আম ১ জুন থেকে হার্ভেস্টিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চেয়ে অন্তত ১৫ দিন আগে হার্ভেস্টিংয়ের সুবিধা থাকায় সাতক্ষীরার আম রপ্তানিতে বিশেষ গুরুত্ব পায়।