মাদারীপুরে করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের সরকারের দেয়া প্রণোদনার কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। প্রান্তিক খামারীরা এই প্রণোদনার অর্থ না পাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে কথা বলতে চান না জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তা। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের বলারকান্দি গ্রামে আক্তারুজ্জামান ও নাজমা বেগম সম্পতি ২০ বছর ধরে বাড়িতে খামার করে গবাদি পশু পালন করেন তারা। ব্যাংক ঋণ নিয়ে ১২টি গরু পালনে প্রচুর অর্থ খরচ করলে কমে গেছে আয়ের উৎস। ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ আসলেও করোনা দুর্যোগে পাননি সরকারি কোন সহায়তা। এতে ক্ষুব্ধ তারা।
এই খামারি দস্পতি জানালেন, করোনার সময়ে আয় রোজগার কম থাকায় গবাদিপশুর পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। সরকারি ভাবে আর্থিক সহায়তা পেলে আমাদের খুব উপকারে আসতো। কিন্তু আমরা তো কোন টাকা পয়সা এখনো পাই নাই। আর পাবো কি না সেটাও জানি না।
শুধু আক্তারুজ্জামান ও নাজমা দম্পতিই নন। তার মতো ওই এলাকার মোশারফ বেপারী, রিপন হাওলাদার, মোস্তফা খানের একই অবস্থা।
খামারি মোশারফ বেপারী বলেন, সরকারি যে আমাদের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়েছে, সেটি আমরা জানিও না। আর কেউ বলেওনি যে কিভাবে এই টাকা পাওয়া যাবে।
মাদারীপুর জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও সংশ্লিষ্টদের থেকে জানা গেছে, করোনাকালে জেলার সদর, শিবচর, কালকিনি ও রাজৈর উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের জন্য ৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ডেইরী, পোল্টি ও ডাক এই তিন ক্যাটাগরিতে জেলার ৭ হাজার ১শ’ ২৭ জন ক্ষতিগ্রস্থ খামারীর প্রত্যেককে ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রনোদনা পাবার কথা রয়েছে।
কিন্তু সেই প্রণোদনার অর্থ পাননি এসব প্রান্তিক খামারীরা। তাদের অভিযোগ, প্রকৃত খামারীদের বাদ দিয়ে অসাধু কর্মকর্তাদের পছন্দের কয়েকজন খামারীদের কিছু টাকা দিয়ে বাকি টাকা লোপাট করেছেন কর্মকর্তারা। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে আর্থিক সহযোগিতার দাবী খামারীদের
এই বিষয়ে মাদারীপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. একেএম আনোয়ারুল হকের কাছে খামারিরা করোনার প্রণোদনা না পাওয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সঠিক নিয়ম অনুযায়ী তালিকা তৈরী করে খামারিদের টাকা প্রদান করেছেন। করোনার প্রণোদনার টাকার বিষয়ের অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয় বলেও তিনি দাবী করেন।
এই বিষয়ে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, এই রকম কোন ঘটনা হওয়ার কথা নয়। তারপরও শিগগিরই এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।