লালমনিরহাটের বড়বাড়িতে অনুমোদনহীন গবাদি পশুর একটি ভেজাল ঔষধ তৈরি কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ গবাদি পশুর ওষুধ ও কেমিকেল উদ্ধার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরে কারখানাটি সিলগালা করে দেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে নুর আলম ও আসাদুজ্জামান আসাদ নামে দুইজনের বিরুদ্ধে ভেজাল ওষুধ তৈরীর অপরাধে (আজ বৃহস্পতিবার) মামলা দায়ের হয়েছে বলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জান্নাত আরা ফেরদৌস বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে বুধবার লালমনিরহাট জেলা সদরের বড়বাড়ি স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন একটি বাড়িতে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির গবাদিপশুর ভেজাল ঔষধ কারখানায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাত আরা ফেরদৌস এ অভিযান চালায়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাত আরা ফেরদৌস জানায়, সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নে গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ এলাকার আসাদুজ্জামান আসাদ নামে এক অসাধু ব্যাক্তি দীর্ঘ দিন থেকে নুর আলমের বাড়িতে যৌথভাবে অনুমোদনহীন স্কয়ার ও একমিসহ বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির লোগো লাগিয়ে গবাদিপশুর ভেজাল ঔষধ তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিলেন। এমন একটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নুর আলমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সেই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের আগমন টের পেয়ে বাড়ির মালিক নুর আলম ও আসাদুজ্জামান আসাদ পালিয়ে যায়। পরে বাড়ির ভিতর থেকে বিপুল পরিমাণ গবাদি পশুর ভেজাল ওষুধ ও কেমিকেল উদ্ধার করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় কাউকে আটক করতে না পেলেও ভেজাল ওষুধ তৈরীর কারখানাটি সিলগালা করে দেয়া হয়। সকল তথ্য উপাথ্য সংগ্রহ করার পর আজ বৃহস্পতিবার বাড়ির মালিক নুরআলম ও ভেজাল ঔষধ প্রস্তুতকারী আসাদুজ্জামান আসাদ নামে দুইজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড়বাড়ি এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের হাতুড়া এলাকার মৃত ওয়াহেদ আলী, মিস্ত্রি কাজ করে কোনরকম সংসার চালাতেন। তার দুই ছেলে নুরআলম ও মান্না বড়বাড়ি বাজারে মানুষের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে রাতারাতি হয়ে যান কোটিপতি। ভেজাল ঔষধ কারখানা, দেহ ব্যবসা, জুয়া, ক্যাসিনো, ভূমিদস্যু ইত্যাদি অপকর্মের সাথে জড়িয়ে দুই ভাই রাতারাতি হয়ে যান টাকা ওয়ালা। তাদের সহযোগিতায় সেই বাড়িতে ভেজাল ওষুধ তৈরী করে আসছিল।
নুরআলম ও মান্নার অবৈধ সম্পদের যথাযথ হিসাব নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবিও জানান তারা।
অভিযানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, সদর থানা পুলিশসহ শত শত উৎসুক জনতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে প্রায় বিশ লক্ষ টাকার ভেজাল ঔষধ উদ্ধার করা হয়।