সাতক্ষীরার পাঁচটি স্থানে জেএমবি’র বোমা হামলা মামলায় ১৯ আসামির মধ্যে ৮ জনকে পৃথক মামলায় সর্বোচ্চ ১৩ বছর ও ৯ জনকে ৯ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় একজনকে খালাস দেয়া হয়। অপর এক আসামি আগেই মারা যান।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম বুধবার এক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত অসামিরা হলেন- মনিরুজ্জামান, নুর আলী, গিয়াস উদ্দিন, ইসমাইল হাবিবুর, বিল্লাল হোসেন, মুনতাজ, মাহববর রহমান লিটন, রাকিব হোসেন, মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, আসাদুর রহমান, আনিসুর রহমান, আলমগির হোসেন, নাসির উদ্দিন। পলাতক আসামিরা হলেন- ফখরুদ্দিন রাজি, অসাদুজ্জামান ও নাঈমুদ্দিন।
সাতক্ষীরার পিপি অ্যাডভোকেট আব্দল লতিফ জানান, ২০০৫ এর ১৭ আগস্ট শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়সহ পাঁচটি স্থানে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে।
ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর বাকালের দলিলউদ্দিন দফাদারের ছেলে নাসিররুদ্দিন দফাদার প্রত্যক্ষদর্শী বাকাল ইসলামপুর চরের রওশানের দেয়া বিবরণ মতে ধরা পড়ে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাটি চিহ্নিত করা হয়।
এই সূত্র ধরে ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিনসহ মোট ১৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) এ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানায় তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়।
২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি সবগুলি মামলায় ১৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়। সে বছরই মামলাগুলি খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। যথা সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৭ এর ২৫ জুন মামলাগুলি খুলনা থেকে ফেরত আসে সাতক্ষীরায়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে মামলা গুলির বিচার কাজ শুরু করেন।
সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়েরকৃত মামলাটিও ২০০৮ সালে বিচার শুরু হয়। আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ।