রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপানের পর ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগের মামলায় তার দুই সহপাঠীকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। রোববার এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে মোহাম্মদপুর থানায়। আদালত ওই দুজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান মদপান করে তাফসিরের বাসায় যাওয়ার পর ওই তরুণীর সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক করেছিলো বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ ।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ দুপুরে জানান, মৃত ও গ্রেপ্তার সবাই রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা পাঁচজন গত শুক্রবার উত্তরার ব্যাম্বোস্যুট রেস্তোরাঁয় যায়। সেখানে তারা মদ পান করে। তাদের মধ্যে একটি মেয়ে এবং তার বন্ধু আগেই চলে যায়। পরে এক পর্যায়ে ওই তরুণী অসুস্থ বোধ করেন। তখন আরাফাতকে গুলশানে নামিয়ে দিয়ে ওই তরুণীকে নিয়ে মোহাম্মদপুরে তাদের বন্ধুর তাফসিরের বাসায় যান রায়হান।
ওই বাসা থেকেই মেয়েটিকে শনিবার সকালে প্রথমে ইবনে সিনা হাসপাতাল এবং পরে আনোয়ার খান মডার্নে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে আরাফাতও অসুস্থ হয়ে শুক্রবার সিটি হাসপাতালে মারা যান, পুলিশ সেই খবর জানতে পারে সোমবার। আরাফাতকে কোথায় দাফন করা হয়েছে আমরা এখনও জানতে পারিনি, এ বিষয়ে খোঁজ খবর চলছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে মিরপুর থেকে বন্ধু আরাফাতের বাসায় যান। এরপর তিনজন উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বোস্যুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং আরেক সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।
মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিল। ধর্ষণের পর রাতে ওই শিক্ষার্থী বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খানকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরের দিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর গতকাল রোববার ওই তরুণী মারা যান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাজেদুল বলেন, আমরা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে। এ ছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে সব ঘটনা বের হয়ে আসবে। এ ঘটনায় গতকাল চারজনকে আসামি করে ওই শিক্ষার্থীর বাবা একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো একজনকে আসামি করা হয়।
নিহতের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।