ইরানের ঐতিহ্যবাহী ইসলামিক রেভুলেশনারী গার্ডকে (আইআরজিসি) আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। গতবছর যুক্তরাজ্যে ১০টি অপহরণ ও হত্যার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্যা টেলিগ্রাফ।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রেভল্যুশনারি গার্ডকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে ঘোষণার করা হোল এই সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত, বৈঠকে উপস্থিত, জনসমক্ষে লোগো বহন ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এ পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন দেশটির নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী টম টুগেনধাত এবং স্বরাষ্ট্র সচিব সুয়েলা ব্রাভারম্যান। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করা হলে আইআরজিসিকে আল-কায়েদার সমগোত্রীয় গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
ইরানে কয়েক মাস ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের এ ঘটনায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ‘সংশ্লিষ্ট’ সাত ব্যক্তিকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে।
দ্বৈত নাগরিকদের আটক বা গ্রেপ্তার বন্ধ করতে গত বুধবার ইরানের প্রতি আহ্বান জানান যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ‘কূটনৈতিক সুবিধা’ পাওয়ার জন্য এ গ্রেপ্তার–কৌশল ব্যবহার করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান দেশটির কুর্দি তরুণী মাসা আমিনি। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বিক্ষোভ। এ বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইরানে বিক্ষোভ রুখতে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। দমন-অভিযানের সম্মুখসারিতে রয়েছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড। তারা ইতিমধ্যে বিক্ষোভ দমনে আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
২০১৯ সালে রেভল্যুশনারি গার্ডকে কালোতালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে রেভল্যুশনারি গার্ডকে তালিকাভুক্ত করা হবে কি না, তা যাচাই-বাছাই করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মানি।