আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এরপর কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। আর স্কুল-কলেজের সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে পৃথক কোনো নির্দেশনা জারি করা হবে না। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
সূত্র জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল সোমবার জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, হলের আসন ও হলে থাকা শিক্ষার্থীর সংখ্যাসহ নানা তথ্য চাওয়া হয়।এ বিষয়ে কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, মন্ত্রণালয়ের চাহিদার আলোকে সব তথ্য আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, সরকারি নির্দেশনায় সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ রয়েছে। ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বন্ধ আছে। তবে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশনা জারি করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খুলবে। এ জন্য ইউজিসির কোনো পরামর্শের প্রয়োজন নেই। তারা নিজেরাই তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। তবে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে করণীয় নির্ধারণে আমরা বৈঠক করব, পরামর্শ দেব।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলে আসনের তিন-চার গুণ বেশি শিক্ষার্থী থাকেন। চারজনের একটি রুমে থাকতে হয় আট থেকে ১২ জনকে। আবার প্রতিটি হলেই রয়েছে একাধিক গণরুম। সেসব রুমে ৪০ থেকে ৮০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী থাকেন। মেসে থাকা শিক্ষার্থীরাও এক রুমে চারজনের কম থাকেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে এসব শিক্ষার্থীর পক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু হল নেই, তাই তাদের এ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তাও নেই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, সরকার যখন স্কুল-কলেজ খুলবে তখন আমরাও বিশ্ববিদ্যালয় খুলব। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে সব শিক্ষার্থীকে এক দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা সম্ভব হবে না। হয়তো একটি বর্ষের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাসে আনতে হবে। আমাদের এ সংক্রান্ত একটি কমিটি রয়েছে। কিভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়, সে ব্যাপারে ওই কমিটি কাজ করছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর আমির হোসেন বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি নেব। তবে আমাদের পর্যায়ক্রমে খোলার সুযোগ নেই। আর হলগুলোতে প্রতি রুমে চারটি সিট। সেটাও পরিবর্তনের সুযোগ নেই। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করব। সম্ভব হলে সরবরাহও করব। এ ছাড়া হলগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখব।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৩৭টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৯১টি যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখের বেশি।