বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ ডেমরা এলাকায় সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ ও র্যাব। দুটি সংস্থা গতকাল বুধবার আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায়। তবে এতে একমত পোষণ করেননি ফারদিনের বাবা।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ফারদিনের বাবা বলেছেন, ‘আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি, তাকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে।
আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। পুলিশের এই তদন্ত আমি বিশ্বাস করি না। ’
পরিবারের দেওয়া কোনো তথ্য প্রমাণ আমলে নেয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘কোনোভাবেই ফারদিন আত্মহত্যা করতে পারে না। তবে গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, তারা হত্যার কোনো আলামত পাননি, মানুষিকভাবে অবসাদগ্রস্ত থেকেই আত্মহত্যা করেন ফারদিন। ’
বাংলাদেশ প্রকৈশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর আত্মহত্যা করেছে তা বিশ্বাস করতে পারছে না তার পরিবার ও সহপাঠীরা। এই নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) যে বক্তব্য দিয়েছে তার প্রমাণ দেখতে ডিবির আহ্বানে সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে সংস্থাটির কার্যালয়ে যান একদল শিক্ষার্থী। প্রায় এক ঘণ্টা পর ডিবির সঙ্গে বৈঠক করে বাইরে এসে বুয়েট শিক্ষাথীরা বলেন, ‘ডিবি এই নিয়ে সলিট কোন তথ্য দিতে পারেনি। আমরা এখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেইনি। ক্যাম্পাসে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে মিডিয়াকে জানাবো। ’
গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরা পুলিশ বক্সের সামনে বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে নামিয়ে দেওয়ার পর নিখোঁজ হন ফারদিন। এ ঘটনায় রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা।
৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীতে ফারদিনের মৃতদেহ পায় নৌ-পুলিশ। তার পরিবার ও সহপাঠীরা দাবি করেন, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকও তাকে হত্যার কথাই বলেন। ঘটনাটি উদ্ঘাটনের জন্য মাঠে নামে ডিবি পুলিশ ও র্যাব। দুই তদন্ত সংস্থার বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় তার বান্ধবী বুশরাকে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নানামুখী খবর এবং পরিবারের সুষ্ঠু তদন্তের দাবির মধ্যে গতকাল বুধবার দুপুরে ডিবির পক্ষ থেকে প্রথমে সংবাদ সম্মেলন করে ফারদিনের আত্মহত্যার কথা জানানো হয়। পরে সন্ধ্যায় র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে একই তথ্য জানায়।