সূর্য ও নক্ষত্রের আলো নিশ্চিত করে পারমাণবিক ফিউশন। এই ফিউশন শক্তি দিয়েই অফুরন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে; যা হবে কার্বন মুক্ত। বিদ্যুৎ উৎপাদনে যুগান্তকারী উদ্ভাবনের এই দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগ। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাটি জানায়, মঙ্গলবার এক ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, তাদের বিজ্ঞানীরা পারমাণবিক ফিউশন প্রযুক্তির ওপর বিরাট অগ্রগতি করেছেন। যে প্রক্রিয়ায় সূর্য ও নক্ষত্র শক্তি পায় ঠিক সেই প্রক্রিয়ায় সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। বিষয়টির সঙ্গে জড়িত তিনটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
বেশ কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা ফিউশন প্রযুক্তিতে শক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন। মৌলিক বিজ্ঞান অনুযায়ী, সূর্যের মতো অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা, যথেষ্ট ঘনত্ব ও সময়ের কারণে হাইড্রোজেন পরমাণু একটির সঙ্গে আরেকটি মিলে হিলিয়াম সৃষ্টি করে। একইসঙ্গে বিপুল পরিমাণ জ্বালানিরও সৃষ্টি হয়। সূর্যের মতো পৃথিবীর বুকেও হাইড্রোজেন ফিউশনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চলছে এসব প্রচেষ্টা।
বিষয়টির সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানীরা সফলভাবে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন, যেখানে ব্যবহার করা জ্বালানির চেয়ে বেশি মাত্রায় শক্তি তৈরি সম্ভব হয়েছে। এতে করে ফিউশন থেকে বাণিজ্যিকভাবে বহুগুণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বিষয়টি নিয়ে সর্বপ্রথম সংবাদ প্রকাশ করে ফিনান্সিয়াল টাইমস। ফিউশন প্রযুক্তিতে দুটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ১০০ মিলিয়ন ডিগ্রি বা এর বেশি তাপমাত্রা দেওয়া হলে, তখন একটি বড় আকারের নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি হয়। এতে বিপুল পরিমাণে শক্তি থাকে। তবে এই প্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে শক্তির অপচয়ও হয়।
ফিউশন ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কাগজে-কলমে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনায় নিরাপদ। এর কারণ খুব সহজ এই প্রযুক্তিতে কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এ ছাড়া অতিরিক্ত আরও অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। এতে করে বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হবে।
নতুন উদ্ভাবন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করবেন মার্কিন জ্বালানি সচিব জেনিফার গ্রানহোম। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি।
ফিউশন প্রযুক্তিতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ করেছে বিল গেটস, জেফ বোজেস ও জন ডোয়ের। গত বছর ফিউশন প্রযুক্তির জন্য এত তিন ধনকুবের ২০৮ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করেছেন।