বিরোধীদের দমাতে মৃত্যুদণ্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় নেওয়ার পর থেকে বিরোধী মতের ১৩০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে তারা। জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এমনটা জানিয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার গোপনে আদালত বসিয়ে অন্তত সাত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও চার যুবককে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে এসব রায় স্থগিত করতে হবে। ’
এক বিবৃতিতে তুর্ক বলেন, ‘সামরিক বাহিনী সুষ্ঠু বিচারের মৌলিক নীতিমালা লঙ্ঘন করছে। মূল বিচারিক পদ্ধতির বিপরীতে গোপন আদালতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সামরিক বাহিনী শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি ঘৃণাও দেখিয়েছে। বিরোধীদের দমন করার জন্য হাতিয়ার হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ব্যবহার করছে তারা। ’
মিয়ানমারের সর্ববৃহৎ শহর ইয়াংগুনের দাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার কুখ্যাত ইনসেইন কারাগারে সামরিক আদালত বসিয়ে সাত শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। এসব শিক্ষার্থীদের বয়স ১৮-২৪ মধ্যে। চলতি বছরের ২১ এপ্রিল তাদের আটক করা হয়।
দাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের একজন সদস্য ফরাসি সংবাদ সংস্থা এপিকে বলেন, ‘ওই সাত জনকে সশস্ত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া গত এপ্রিলে একজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যার দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ’
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। ক্ষমতায় এসেই সু চিসহ তার দলের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে জান্তা সরকার। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই দেশটির নাগরিকদের ওপর শুরু হয় দমন-পীড়ন। এরপরেই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে দেশটির সাধারণ জনগণ। জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গণতন্ত্রপন্থী বাহিনীর অন্তত দুই হাজার সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।