গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। এই অস্ত্র পরীক্ষায় যুক্ত থাকা উত্তর কোরিয়ার কিছু নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাটি জানায়, বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার জন ইল হো, ইউ জিন এবং কিম সু গিল অর্থাৎ এই তিন ব্যক্তির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
গত এপ্রিলে এই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইইউ।
এ দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিঙ্গাপুরের এক নাগরিক, একজন তাইওয়ানিসহ ৭ ব্যক্তি ও আটটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। সিউল যাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে।
অন্যদিকে জাপান তিনটি প্রতিষ্ঠান ও এক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞায় উত্তর কোরিয়ার সাইবার গ্রুপ লাজারাসও রয়েছে।
চলতি বছরে রেকর্ড ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। এ বছরে ৬০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা। এর মধ্যে বেশিরভাগই স্বল্প পাল্লার। তবে গত মাসে দুটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়া শিগগিরই সপ্তমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে, এমন শঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট জানায়, জন ইল হো ও ইউ জিন উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধাস্ত্র শিল্প বিভাগের ভাইস ডিরেক্টর এবং ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিকাশে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর কিম সু গিল ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কোরিয়ান পিপলস আর্মি জেনারেল পলিটিকাল ব্যুরোর ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। উত্তর কোরিয়ার বেআইনি কাজ ও গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরিতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করায় টোকিও এবং সিউলকে সঙ্গে নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পরা ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের যে কোনা সম্পদ যা যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। এমনকি তাদের সঙ্গে যে কোনো লেনদেনে বাধা দেওয়া হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির প্রতিক্রিয়া জানানোর অংশ হিসেবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক দশক ধরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েও উত্তর কোরিয়াকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি থেকে ফেরাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।