ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক্টরচাপায় সিয়াম (৯) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। রোববার (২৭ নভেম্বর) উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের শামপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় সিয়াম নিহত হয়। নিহত সিয়ামের মরদেহ মর্গে রেখে হাসপাতাল ক্যান্টিনে বিষয়টি মীমাংসার অভিযোগ উঠেছে।
সিয়ামের পরিবারের সদস্যরা জানান, সিয়াম সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের ছাতিয়ান গ্রামের তার নানার বাড়িতে থাকতো।
গত তিন দিন আগে সে নিজ বাড়িতে আসে। রোববার দুপুরে সে সড়কের পাশে খেলা করছিল। এসময় একটি ট্রাক্টর সিয়ামকে চাপা দিয়ে চলে যায়। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, সন্ধ্যার পর সিয়ামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা অবস্থায় হাসপাতালের ক্যান্টিনে বসেই ঘটনাটি রফাদফা করে মিমাংসা করতে বৈঠক করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম ভূইয়া, সুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভূইয়া, মজলিশপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, মজলিশপুরের যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেনসহ স্থানীয় সর্দাররা।
বৈঠকে নিহত সিয়ামের পরিবারকে ৭০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা নির্ধারণ করা হয়। এতে আপত্তি করে সিয়ামের পরিবারের পক্ষে থাকা সর্দারগণ। তারা এক লাখ টাকা দেওয়ার দাবি জানান। এসময় সুহিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভূইয়া আরও ১০ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। পরে সদর থানায় সমঝোতার বিষয়টি জানিয়ে মামলা যেন না হয়, এর দায়িত্ব দুই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে জানতে মজলিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল হাসানের বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য বসে ছিলাম। কিন্তু এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। ’
তিনি এই বিষয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম ভূইয়ার সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
যুবলীগ নেতা বিলাল হোসেন বলেন, ‘বৈঠকে ৭০ হাজার টাকা রায় হয়েছিল। নিহতের পরিবার এই টাকা নিতে চাচ্ছেন না। ট্রাক্টরের চালকের বাড়ি সুহিলপুর ইউনিয়নের মীরহাটিতে। তাই বৈঠকে সুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। আর থানা থেকে ওসি সাহেব জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া এই মরদেহ দেবেন না। ’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরামুল ইসলাম জানান, একটি ছেলে ট্রাক্টর চাপায় মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে এই বিষয়ে তার পরিবার বা অন্য কেউ কিছু জানাননি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। বিষয়টি মীমাংসার বিষয়ে আমি জানি না। মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।