বিশ্ববাসীকে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ভাগ্নি ফরিদেহ মোরাদখানি। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘হে মুক্ত পৃথিবীর মানুষজন, আমাদের পক্ষে থাকুন এবং আপনাদের দেশের সরকারকে বলুন এই খুনি ও শিশুহত্যাকারী শাসকদের যেন তারা সমর্থন দেওয়া বন্ধ করে। ধর্মীয় নীতি-নৈতিকতার প্রতি তাদের কোনও আনুগত্য নেই এবং ক্ষমতা ধরে রাখা ও বলপ্রয়োগ ব্যতীত তারা আর কিছুই জানে না। ’ তবে এ ঘটনায় খামেনির অফিস থেকে কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
খবর আরব নিউজের।
ফরিদেহ মোরাদখানি পেশায় একজন প্রকৌশলী। তবে তিনি একজন সক্রিয় মানবাধিকারকর্মীও। ফরিদেহ মোরাদখানি আয়াতুল্লাহ খামেনির বোনের মেয়ে। তার বাবা আলি মোরাদখানি আরাঙ্গেহ ছিলেন একজন শিয়াপন্থী মুসলিম নেতা। তবে ইরানে ক্ষমতাসীন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও আদর্শগত বিরোধ ছিল তার।
সংবাদসংস্থা হারানার বরাত দিয়ে আরব নিউজ জানিয়েছে, ইরানে চলমান বিক্ষোভে উসকানি ও সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি তেহরানের এভিন কারাগারে রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে পর তার ভাই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, জেলে যাওয়ার আগেই এ ভিডিওটি ধারণ করেছিলেন তিনি। এ বছরের শুরুতে তাকে একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কয়েকদিন জেলে থেকে ছাড়া পান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে ঠিকমতো হিজাব পরিধান না করায় ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনি। পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু তার হয় ।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরদিন থেকে এক অভূতপূর্ব বিক্ষোভ শুরু হয় ইরানে। প্রথম পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা মাহসাকে গ্রেপ্তারকারী পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানালেও খুব দ্রুত সেই বিক্ষোভ রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।