ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে টুইটার কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্বের শীর্ষ ধনী টুইটার কেনার পর গুঞ্জন উঠে ট্রাম্পকে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটিতে ফিরবেন। এবার সেই গুঞ্জন সত্য হওয়ার পথে হাঁটছে। কারণ ট্রাম্পকে ফেরাতে একটি ভোটের আয়োজন করেছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী মাস্ক।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ট্রাম্পকে তার অ্যাকাউন্ট ফেরত দেওয়া যায় কি না এ বিষয়ে টুইটারের নিজের অনুসারীদের ভোটের জন্য একটি পুল তৈরি করেন ইলন মাস্ক। ইতোমধ্যে সেখানে ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০২ ভোট পড়েছে। ট্রাম্পকে অ্যাকাউন্ট ফেরত দেওয়ার পক্ষে ভোট পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
এর আগে শুক্রবার সকালে দিকে ট্রাম্পর অ্যাকাউন্ট ফেরত দেওয়া নিয়ে কথা বলেন মাস্ক। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। তবে ইতোমধ্যে কিছু অ্যাকাউন্ট পুনঃস্থাপন করা হয়েছে যেগুলো নিষিদ্ধ ছিল।
এ দিকে শুক্রবার রাতে কর্মীদের আরও একটি মেইল দিয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম টুইটার। ওই মেইলে বলা হয়, যদি কোনো কর্মী সফটওয়্যার কোর্ড লিখতে জানেন তাহলে স্যান ফ্যান্সিসকোর টুইটার কার্যালয়ের দশম তলায় যোগাযোগ করেন। পরে আরেকটি মেইলে মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি ব্যক্তিগতভাবে স্যান ফ্যান্সিসকোর কার্যালয়ে উপস্থিত হন, তাহলে আমি আপনার প্রশংসা করবো। আমি মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যালয়টিতে থাকবো। ’
টুইটারের সব অফিস তিনদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা দেওয়ার পরই এমন সংবাদ সামনে এসেছে।
গত মাসে ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কেনেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। এরপরেই কোম্পানিটি থেকে ছাঁটাই করা হয় বহু কর্মীকে। এমনকি নতুন নতুন অনেক নিয়ম চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কর্মঘণ্টা বৃদ্ধি। এর জেরে ১০০০-১২০০ কর্মী টুইটার থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন।
মেইলের মাধ্যমে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মটির নতুন মালিক বলেন, ‘টিকে থাকতে চাইলে কর্মীদের এভাবে কাজ করতে রাজি হতে হবে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে যারা এতে সই করবেন না, তাদের তিন মাসের বেতন দিয়ে ছুটি দেওয়া হবে। ’
মাস্কের টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে কোম্পানিটিতে প্রায় ৮ হাজার কর্মী ছিল। এমনকি হাজার হাজার চুক্তি ভিত্তিক কর্মী ছিল। তবে মাস্ক এসেই বেশিরভাগকে ছাঁটাই করেছেন।
শীর্ষ ধনকুবের এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান ইলন মাস্ক গত ২৭ অক্টোবর টুইটারের মালিকানা গ্রহণ করেন। তিনি ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কেনেন। টুইটার কেনার পর মাস্ক বলেছিলেন, কোম্পানির গ্রাহকদের জন্য ফ্রির জমানা শেষ। অর্থের বিনিময়ে ব্যবহারকারীরা চাইলেই নিজেদের অ্যাকাউন্টকে ‘ভেরিফায়েড’ করে নিতে পারবেন। এ জন্য প্রতি মাসে পকেট থেকে খসবে আট ডলার। তবে পরে সেই নিয়ম স্থগিত করেছে তারা।
গত মাসে টুইটারের মালিকানা গ্রহণ করেই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পরাগ আগারওয়ালসহ কোম্পানির কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেন মাস্ক। ইতোমধ্যে তিনি টুইটারের হাজারো কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন। কর্মীদের কর্মঘণ্টা বাড়িয়ে ছুটি বন্ধ করেছেন। যারা বাড়িতে বসে অফিস করছিলেন, তাদের অফিসে এসে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান