যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত, জাপানি তথ্যচিত্র পরিচালকসহ ৬ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। দেশটির জাতীয় দিবস উপলক্ষে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, মিয়ানমারের জাতীয় দিবস উপলক্ষে ৭০০ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে জান্তা সরকার।
এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত ভিকি বওমান, জাপানি তথ্য চিত্র পরিচালক তরু কুবাতা ও দেশটির ক্ষমতাচ্যুত এক নেতার উপদেষ্টা অস্ট্রেলিয় নাগরিক সেন টার্নেল রয়েছেন।
চলতি বছরের শুরুতে কুবাতা ও বওমানকে ও ২০২০ সালে টার্নেলকে আটক করা হয়। পরে সামরিক আদালতের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর দেশ চালাচ্ছে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) নামে জান্তা সরকার। ক্ষমতা দখলের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার মানুষকে বন্দি করেছে তারা।
বিবিসি বলছে, মিয়ানমারে ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছিলেন ভিকি বওমান। চলতি বছরের শুরুর দিকে স্বামীসহ বওমানকে গ্রেপ্তার করে জান্তা সরকার। গ্রেপ্তারের সময় ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত মিয়ানমার সেন্টার ফর রেসপন্সিবল বিজনেসের (এমসিআরবি) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন বওমান। যুক্তরাজ্যের সাবেক এই দূতের বিরুদ্ধে ভিসা আইন লঙ্ঘন এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে তাকে মিয়ানমারে থাকতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়। এর জেরে তাদের এক বছর করে কারাদণ্ড হয়।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর ২০২১ সালে প্রথম বিদেশি হিসেবে অস্ট্রেলিয় নাগরিক সেন টার্নেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে তাকে তিন বছরের সাজা দিয়ে জেলে পাঠায় দেশটির সামরিক আদালত। তবে আদালতের এ রায় প্রত্যাখ্যান করে অস্ট্রেলিয় সরকার।
এ দিকে চলতি বছরের জুলাইয়ে মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুনে একটি সরকারবিরোধী সমাবেশের কাছে আটক করা হয় ২৬ বছরী তরু কুবাতাকে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে ৩ বছর এবং একটি ইলেকট্রনিক যোগাযোগ আইন লঙ্ঘনের জন্য ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। মনিটরিং গ্রুপ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্সের তথ্য মতে, অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবাহিনীর হাতে ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।