অবশেষে শ্রীলঙ্কা তাদের বাৎসরিক জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছে। সোমবার (নভেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন। চলতি বছরের ২০ জুলাই দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটাই তার মেয়াদের প্রথম বাজেট।
এ সময় বিক্রমাসিংহে বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল দেখতে আগ্রহী।
এ কারণে আইএমএফের নির্দেশনায় এ বাজেট ঘোষণা করা হল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘোষিত বাজেটে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৮ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ শতাংশ।
আগামী ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ৩০০ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের শাসনামলের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও করোনা মহামারির প্রভাবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকেই অর্থ সংকট শুরু হয় শ্রীলঙ্কায়। এই সংকট আরও তীব্র হয় চলতি ২০২২ সালের শুরু থেকে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত তলানিতে ঠেকায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্য কেনার মতো অর্থেও টান পড়ে।
এ পরিস্থিতিতে গত ১৩ এপ্রিল তৎকালীন অর্থমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে ঘোষণা করেন- শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গেছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এমন চরম অর্থনৈতিক সংকট কখনও দেখেনি শ্রীলঙ্কাবাসী। ফলে দেশটিতে ব্যাপক আকারের সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় এবং জনবিক্ষোভের তেজে টিকতে না পেরে গত জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশত্যাগে বাধ্য হন।
গোতাবায়ার পলায়নের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন রনিল। সেই সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ও নিজের হাতে রাখেন তিনি। বর্তমানে শ্রীলঙ্কা প্রায় সম্পূর্ণভাবে আইএমএফের ঋণের টাকায়। সোমবারের বাজেট বক্তৃতায় বিক্রমাসিংহে বলেছেন, আগামী ২০২৩ সাল শেষ হওয়ার আগেই এই ঋণের উল্লেখযোগ্য অংশ সরকার পরিশোধ করতে চায়।