রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শনিবার (১২ নভেম্বর) রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর করতে টেলিফোনে আলাপ করেছেন। দেশ দুইটির সরকারের প্রদত্ত আলাদা বিবৃতির বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই দুই নেতা দেশ দুইটির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করতে কিভাবে সহযোগিতার কাঠামো তৈরি করা যায়, রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিশেষ করে পরিবহন ও লজিস্টিক সাপোর্টের ক্ষেত্রে তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। রাশিয়ার ও ইরানের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে সম্মত হয়েছেন তারা।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার জন্য রাশিয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করাকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিশেষ করে ইউরেশীয় অঞ্চলে পরিবহনখাতের উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য ইব্রাহিম রাইসির এমন বক্তব্য রাখেন।
ইরান সরকারের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজে একটি শিয়া ধর্মীয় স্থাপনায় হামলায় ১৫ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
রাশিয়ার গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (৯ নভেম্বর) তেহরানে রাশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা নিকোলাই পাত্রুশেভ ও ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা আলী শামখানির মধ্যে একটি বৈঠকের পর এই ফোনালাপের খবর যায়। এই বৈঠকে তারা ইউক্রেনের পরিস্থিতি ও তাদের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে পশ্চিমা হস্তক্ষেপ মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে আলোচনা করেন।
সম্প্রতি ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর ও জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলায় ইরানের তৈরি ‘কামিকাজে’ ড্রোন ব্যবহার করেছে রাশিয়া, এমন অভিযোগ তুলেছে কিয়েভ। যদিও তেহরানের দাবি যুদ্ধের কয়েক মাস আগেই ইরান রাশিয়াকে এই ড্রোন সরবরাহ করে। ইরানের কর্মকর্তারা বলে আসছেন রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা থাকলেও ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য ক্রেমলিনকে অস্ত্র সরবরাহ করেনি তেহরান।
ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধে ড্রোন সরবরাহের অভিযোগে ইরানের ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এছাড়া ইরানের অভ্যন্তরে মাহশা আমিনি নামে এক তরুণীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর জেরে এখনও আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে পশ্চিমারা এমন অভিযোগ তেহরানের। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও ইরানের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী ও সক্রিয় হয়েছে।