বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের অধিকার দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশটির ৯ টি রাজ্য। বুধবার (৯ নভেম্বর) দিল্লিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন বিষয়টি। খবর হিন্দুস্থান টাইমসের।
এই ৯ রাজ্য হলো গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি ও মহারাষ্ট্র।
তবে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি শরণার্থী বসবাস করলেও নাগরিকত্ব সুবিধা দেওয়ার তালিকায় নাম নেই রাজ্যটির। তালিকায় রাখা হয়নি আসাম রাজ্যকেও। অথচ ওই দু’টি রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বিপুল সংখ্যক শরণার্থী বসবাস করছেন দেশটিতে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন মেনে ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া মোট ১ হাজার ৪১৪ জনকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
যাদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা হিন্দু, শিখ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।
চলতি ২০২২ সালেও এই ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান), পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম প্রধান দেশ থেকে যদি কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ সাপেক্ষে তাদেরকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
৯টি রাজ্য নাগরিকত্ব সুবিধা দিলেও পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাস্তবায়নের অনুমতি দেবেন না বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের ভারতীয় নাগরিকত্বের আশ্বাস দিয়েছেন। নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে এক সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মতুয়া সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করছি যে আপনি ভারতের নাগরিক। আমি আশ্বাস দিচ্ছি যে কেউ আপনার নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে পারবে না। শরণার্থীদের জন্য জমি দেব। আমি এখানে সিএএ হতে দেব না। ”
উল্লেখ, মতুয়ারা, বাংলার তফসিলি জাতি জনসংখ্যার একটি বড় অংশ। ১৯৫০ সাল থেকে বর্তমান বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছে তারা।