যুদ্ধের জন্য চীনা সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। পিপলস লিবারেশন আর্মিকে (পিএলএ) উদ্দেশে করে তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য সমস্ত শক্তি দিয়ে মনোনিবেশ করতে হবে। ’
চীনের কমিনিউস্ট পার্টির সংবাদপত্র দ্য পিপলস ডেইলির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, সম্প্রতি তৃতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শি।
মঙ্গলবার পিএলএর একটি অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় দেখা যায় চীনের প্রেসিডেন্টকে। আর এই ছবি দিয়ে বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য পিপলস ডেইলি।
পিএলএর ওই অনুষ্ঠানে শি বলেছেন, ‘চীনের নিরাপত্তা ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে আছে। সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ জোরদার করতে হবে। ’
‘আপনাদের সমস্ত শক্তি লড়াইয়ে ফোকাস করুন। লড়াইয়ের জন্য কঠোর পরিশ্রম করুন। জয়ের জন্য তৈরি হোন। চীন একটি অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত নিরাপত্তা পরিস্থিতির মধ্যে থাকায় সেনাবাহিনীকে অবশ্যই জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
এর আগেও সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন শি। ২০১৩ ও ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পরই তিনি এ নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগের তুলনায় এবার একটু জোর দিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন শি।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের উইলি ল্যাম বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে এ বার্তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানকে সতর্ক করছেন তিনি। ’
গত মাসে বেইজিংয়ে চীনের ক্ষমতাসীন কমিনিউস্ট পার্টির ২০তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে ৬৯ বছর বয়সী শি জিনপিং পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের (সিএমসি) প্রধান হিসেবে তৃতীয় মেয়াদ নিশ্চিত করেন। সম্মেলনে তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা করেন তিনি। ওই সময় তিনি তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তেজনার জন্য বিদেশী হস্তক্ষেপকে দায়ী করেছেন।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দেখে চীনা সরকার। এ বিষয়ে একাট্টা শি।
বেশ কিছুদিন ধরেই তাইওয়ানের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করছে চীন। তাইওয়ান প্রণালী ঘিরে সামরিক মহড়া চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরেই অভ্যন্তরীণ অখণ্ডতায় আঘাত হানার অভিযোগ এনেছিল চীন। জিনপিং যদি তাইওয়ানে আক্রমণ করেন, তাহলে সামরিক সহায়তা দেয়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সম্প্রতি মাসগুলোতে অনেকটা আক্রমণাত্মক সুর ব্যবহার করেছেন শি। এই সময়ে সেনাবাহিনী সদস্যদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার্থে সাহস ও লড়াইয়ের মনোভাব বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছেন তিনি। কমিনিউস্ট পার্টির উদ্বোধনী বক্তৃতায় ডুঝেং (সংগ্রাম) শব্দটি ১৭ বার ব্যবহার করেছেন। সাম্রাজ্যবাদী প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ডুঝেং শব্দটি ব্যবহার করা হয়।