উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে ও জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর প্রয়োজন ২ লাখ কোটি ডলার। যুক্তরাজ্য ও মিশরের করা এক যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, জাতিসংঘ সমর্থিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সংকট মোকাবেলা ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরে উন্নয়নশীল এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জলবায়ু তহবিলে প্রয়োজন পড়বে ২ লাখ কোটি ডলার।
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে দেশগুলোকে দূরে রাখার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ও স্বল্প কার্বন নিঃসরণকারী প্রযুক্তি বিনিয়োগ এবং চরম আবহাওয়ার প্রভাব থেকে সুরক্ষায় এই অর্থ প্রয়োজন পড়বে।
মিশরে চলা জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭ এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) প্রকাশিত গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, সংকট মোকাবেলায় এই বৃহৎ অর্থ ধনী দেশ, বিনিয়োগকারী ও বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক থেকে আসা উচিত।
জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় চীন বাদে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো বর্তমান বিনিয়োগ ৫০ হাজার কোটি ডলার। আর প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ কোটি ডলার পাওয়া গেলে তা দিয়ে চীন ছাড়া অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর চাহিদা পূরণ করা যাবে।
এ গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন জলবায়ু অর্থনীতিবিদ নিকোলাস স্টার্ন। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানের জলবায়ু সংকট ধনী দেশগুলোর কারণে সৃষ্ট, তাদের এটা স্বীকার করা উচিত। ন্যায়বিচারের জন্য সংকট মোকাবেলায় তাদের বিনিয়োগ করা উচিত। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দশকে জ্বালানি অবকাঠামো এবং খরচের বেশির ভাগ উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হবে। দেশগুলো যদি কার্বন নিঃসরণ ও জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর থাকে, তবে বিশ্ব বিপজ্জনক জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি এড়াতে পারবে না। এতে ধনী বা গরিব উভয় দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষের জীবনের ও জীবিকার ক্ষতি হবে। ’
‘দরিদ্র দেশগুলোতে কম কার্বন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অর্থায়ন করা গেলে কোটি কোটি মানুষের দারিদ্র্য দূর করা যাবে। এমনকি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ও গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমবে,’ যোগ করেন এই অর্থনীতিবিদ।
গার্ডিয়ান বলছে, এবারের জলবায়ু সম্মেলনে লাভ-ক্ষতির বিষয়টি নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। উন্নত দেশগুলো গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফল ভোগ করছে দরিদ্র দেশগুলো। বৈরি আবহাওয়া মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ করতে পারছে না দরিদ্র দেশগুলো।
২০০৯ সালে ধনী দেশগুলো বলেছিল, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০২০ সালের মধ্যে দরিদ্র দেশগুলোকে বার্ষিক ১০ হাজার কোটি ডলার করে সহায়তা দেওয়া হবে। তবে এমনটি করা হয়নি। এমনকি পরবর্তী বছরেও এই অর্থ পূরণ হবে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই।