আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধা আঙুলি দেখিয়ে একের পর এক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। তাতে খরচ হচ্ছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। অথচ পিয়ংইয়ংয়ের অর্থনীতি ততটাও সমৃদ্ধ নয়। তাই প্রশ্নটা পুরনো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য বিশাল এই অর্থের যোগান আসে কোথা থেকে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এ নিয়ে অনুসন্ধান চালান। যাতে জানা যায় ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ১.৭ ট্রিলিয়ন উন মূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে পিয়ংইয়ং। খবর দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম চোসুনিলবোর।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান মহড়ার পাল্টা জবাব দিতে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। যাতে খরচ হয়েছে শত শত বিলিয়ন উন। তাতেই প্রশ্ন ঝেঁকে বসে দক্ষিণ কোরিয়া ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের। অনুসন্ধান চালায় দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা।
রোববার প্রকাশিত সেই অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘উত্তর কোরিয়া বিটকয়েন এবং ইথেরিয়াম অ্যাকাউন্ট থেকে কমপক্ষে ১.৭ ট্রিলিয়ন উন চুরি করেছে। এই কারণেই উত্তর কোরিয়া তার ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতি সত্ত্বেও এত উস্কানি দিতে সক্ষম হয়েছে। ’
এ বিষয়ে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি ইকোসিস্টেম দ্রুত বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে, জেনারেল রিকনেসেন্স ব্যুরো দ্বারা পরিচালিত লাজারসের মতো উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার গ্রুপগুলি এক্সচেঞ্জে হ্যাকিংয়ের দিকে মনোনিবেশ করেছিল। সেখান থেকে যে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল তা পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়নে অর্থায়ন করা হয়েছিল। ’
মার্কিন ব্লকচেইন ফার্ম চেইন্যালাইসিস আগস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, এই বছর প্রায় ৬০ শতাংশ ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করেছে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা।
এর আগে ২০১৬ সালের পর থেকেই আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে। এরপর করোনভাইরাস মহামারীতে সীমান্ত লকডাউন ও ড্রাগ লেনদেন কমে আসায় মুদ্রা অর্জন কঠিন হয়ে পড়ে দেশটির। যার ফলে ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে স্যুইচ করতে বাধ্য হচ্ছে উত্তর কোরিয়া। এমনটিই দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
উল্লেখ্য, খুব শিগগিরই সপ্তম পারমাণবিক পরীক্ষা শুরুর কথা ভাবছে উত্তর কোরিয়া। তার আগে গত আগস্টে উত্তর কোরিয়ার সাইবার হুমকির প্রতিক্রিয়া জানাতে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে। যাদের প্রধান কাজ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে অর্থ সংগ্রহে বাধা দেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করা।