দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিমান মহড়ার জেরে গত ২ নভেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় শহর উলসানের জলসীমার দিকে দুটি পারমাণবিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে করে উত্তর কোরিয়া। এর পরও শান্ত হয়নি পিয়ংইয়ং। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ করে দেশটি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার যুক্তরাষ্ট্রকে নির্দয় জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এর বরাত দিয়ে জানিয়েছে আল-জাজিরার।
সিউল ও ওয়াশিংটনের যৌথ বিমান মহড়ার পর আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ছবি প্রকাশ করেছে পিয়ংইয়ং। এছাড়াও যৌথ বিমান মহড়াকে একটি ‘উন্মুক্ত উস্কানিমূলক এবং বিপজ্জনক যুদ্ধ মহড়া’ উল্লেখ্য করে নিন্দা জানিয়েছে পিয়ংইয়ং।
কোরিয়ান পিপলস আর্মির জেনারেল স্টাফের সোমবারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়ার জবাব দিতে ‘টেকসই, দৃঢ় এবং অপ্রতিরোধ্য বাস্তবিক সামরিক পদক্ষেপ’ নেবে উত্তর কোরিয়া।
কেসিএনএ প্রতিবেদন অনুসারে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলছে, মহড়াগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা বাড়ানোর লক্ষ্যে করা হয়েছে। মহড়াগুলি আমাদের খোলা উস্কানি দিচ্ছে। যা খুব উচ্চ আক্রমণাত্মক প্রকৃতির একটি বিপজ্জনক যুদ্ধ মহড়া।
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী বলছে, ‘শত্রুদের ক্রমাগত যুদ্ধের হিস্টিরিয়াকে ধ্বংস করার জন্য তাদের বিমান ঘাঁটি এবং বিমানের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রধান শহরে বিভিন্ন আক্রমণের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ’ উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন উৎক্ষেপণের তত্ত্বাবধান করেছেন কিনা তা উল্লেখ করা হয়নি ওই প্রতিবেদনে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়াকে আক্রমণের মহড়া হিসেবে দেখছে উত্তর কোরিয়া। যার জেরে গত ২ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্ব উপকূলীয় শহর উলসানের জলসীমার দিকে প্রায় ২৩টি উৎক্ষেপণ ছুড়ে উত্তর। যার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উত্তর সীমারেখার ২৬ কিমি দক্ষিণে অবতরণ করেছিল। যা ১৯৫৩ সালে কোরিয়ান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, পিয়ংইয়ং বিশেষভাবে সতর্কতামূলক এসব মহড়ার বিষয়ে সংবেদনশীল কারণ তাদের বিমানবাহিনী উচ্চ প্রযুক্তির জেট এবং সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত পাইলটের অভাব রয়েছে। এবং এটি তার সামরিক বাহিনীর অন্যতম দুর্বল অংশ।