সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পটুয়াখালীতে মাদ্রাসা থেকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে কিশোরকে অপহরণ। ইজতেমা ময়দানে নিহতের ঘটনায় জামায়াত আমিরের শোক জেলা জজের ড্রাইভার পরিচয়ে অবৈধভাবে জমি দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন পটুয়াখালীতে হত্যার উদ্দেশ্য সাংবাদিককে বেধরক মারধর থানায় মামলা। কসম পাচার কালে মূল হোতা আটক গলাচিপায় চেতনানাশক দ্রব্য ব্যবহার করায় মা-ছেলে অসুস্থ  গলাচিপায় পাচারের সময় ১৭ কচ্ছপসহ ব্যবসায়ী আটক লালমনিরহাটে আ.লীগ নেতা সুমন খান ও স্ত্রীর ব্যাংকে ২৩৭ কোটি টাকা, অর্থপাচার মামলা গলাচিপায় পুলিশের মধ্যস্থতায় আড়ৎদারের টাকা ফেরত দিয়েছেন ফল ব্যবসায়ী গলাচিপায় জেলেদের মাঝে চাল বিতরন

ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরে আ.লীগের আয়োজনে আন্তর্জাতিক কনফারেন্স

অনলাইন ডেক্স
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২
  • ৭৬ সময় দর্শন

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন সম্পন্ন করলো আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে উপমহাদেশে প্রথম কোনো রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের আয়োজন এটি। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

শনিবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান হয় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে।

কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন’। 

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ২০টি ক্যাটাগরিতে ইতোমধ্যে ৫৭৮ জন গবেষক তাদের গবেষণা পত্র জমা দিয়েছে। পেপার ও পোস্টার মোট জমা পড়েছে ৬৬২টি। শুধু বাংলাদেশের গবেষকরা নন— ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, ভারত, জাপান, চীন, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর থেকেও গবেষকরা শতাধিক পেপার জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন— সিলিকন ভ্যালির বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ, অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডার ম্যাকমাস্টার ও ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার টেক্সাস আর্লিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের কিউসু বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়, চায়না অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। এ ছাড়াও বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েট, ডুয়েট, আইইউটি এবং দেশের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেমন- আইডব্লিউএম, সিইজিআইএস, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদিতে কাজ করছেন এমন গবেষকরা সম্মেলনে পেপার জমা দেন।

সমাপনী দিনে সকাল ১০টা থেকে টেকনিক্যাল সেশন শুরু হয়। এদিন আইইবি’র কাউন্সিল রুমে সম্মেলনের তৃতীয় এবং সমাপনী দিনের প্রথম মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। এর পর ১০টি আলাদা ভেন্যুতে ৭০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। দুপুর ২টা ২০ মিনিটে চতুর্থ এবং শেষ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইইইই’র ইতিহাসের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট ড. সাইফুর রহমান। এরপর আলাদা ১০টি ভেন্যুতে ৭৩টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন গবেষকরা। এর আগে শুক্রবার সকালে আইইবি’র অডিটোরিয়ামে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে প্রায় ২৫২টি গবেষণাপত্র উপস্থাপিত হয়। এসব গবেষণাপত্র থেকে যে সব সুপারিশ আসবে সেগুলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সেল এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্ব স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। এছাড়া অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মুনাজ আহমেদ নূর এবং সদস্য সচিব প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন, উপকমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)।

এই আয়োজনের প্রথম দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের এখন যে অবস্থা, আমাদের এখন পথের মানুষের কথা ভাবতে হবে, বিপ্লব আমরা করবো, কিন্তু এখন মানুষ বাঁচাতে হবে। সংকট থেকে পরিত্রাণ করতে হবে, সংকট উত্তরণই এখন প্রধান কাজ। মানুষ কষ্টে আছে, এত কোনো সন্দেহ নেই। সাধারণ মানুষ, মধ্যবিত্ত কষ্টে আছে। সারা দুনিয়ায় সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে, শুধু বাংলাদেশে নয়। এই সংকট থেকে পরিত্রাণের জন্য আজকে আমাদের নেত্রী দিনরাত পরিশ্রম করছেন। উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে এটাই বিপ্লব, এখন উৎপাদন বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই, মাছ ভাতটা থাকলেই তো হলো। সেটা আমাদের সার্ভাইবালের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। এই বিপ্লবটাই এখন করতে হবে। সেটা সকলেরই দায়িত্ব আছে, সবাই দায়িত্ব পালন করবেন। ‘

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিয়া চৌধুরী বলেন, এখন আর গ্রামে হালচাষ হয় না। যান্ত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে সর্বত্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন বাংলার ছাত্রী, কিন্তু উনি আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ। তাঁর পেছনে এমন একজন কারিগর আছেন, যে আমাদের পথ মসৃণ করেছেন। নামের সাথেই জয় করছেন সব। তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ যদি না করা হতো, তবে করোনায় থমকে যেতো জীবন যাত্রা। মানুষ খাবার অর্ডার করে এখন অনলাইনে। মন্বন্তর ও মারিয়ে বাংলাদেশকে থামানো যায় না, যাবেও না। বাংলাদেশ যেখান থেকে উঠে আসছে তা কেউই ভাবতে পারেনি। যে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করেছিল সেই কিসিঞ্জারই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুরস্কৃত করেছেন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যতই বলা হোক তার পেছনে রয়েছে মানুষ। মানুষ যা চেয়েছে, মানুষ তাই পেরেছে।

সমাপনীতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা চারপাশে তাকালেই দেখি সব কর্মে সূচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করেন বঙ্গবন্ধু। বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, টিঅ্যান্ডটি বোর্ড গঠন, আইটিইউর সদস্য পদ অর্জন, বিশ্ব ডাক সংস্থা (ইউপিইউ)’র সদস্য পদ অর্জন, এখন যাঁরা লাফালাফি করেন তারা এক সময় ভাবতো সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হলে দেশের তথ্য বাইরে পাচার হয়ে যাবে। আসলে বিএনপি কোন নতুন জিনিস গ্রহণ করতে ভয় পায়। মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি তারুণ্য। এই তরুণদের যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়ে পঞ্চম শিল্পবিপ্লবেও নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ।

সমাপনী অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু মাঠে মিছিল মিটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গবেষণা ও সৃজনশীল কাজও করে থাকে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময় দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে কাজ করে। যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে উপমহাদেশে প্রথম কোনো রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছে। যা যে কোনো রাজনৈতিক দলের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এদিকে সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করতো, যারা আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বন্ধুগণ, আমাদের ডিজিটাল রূপকল্প নিয়ে কথা বলতেন- যে দেশের ৪০ শতাংশ ঘরে বিদ্যুৎ নেই, সে দেশ কীভাবে ডিজিটাল হবে? শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন যে, যদি সততা থাকে, দূরদর্শিতা থাকে, সাহসিকতা থাকে তাহলে অবশ্যই একটা দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত মধ্যম আয়ের প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশে উন্নত করা যায়।

আয়োজকেরা জানান, কনফারেন্স থেকে যে সব সুপারিশমালা এসেছে সেগুলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দফতর ও রিসার্চ সেল এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেওয়া হবে। যেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ রাখতে পারে।

আরো পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পড়ুন এই বিভাগের আরও খবর

Chairman Md. Azadul Islam. CEO Md. Amir Hossain. Editor S, M, Shamim Ahmed. Managing Director Md. Lokman Mridha, office House # 43 ( Ground Flooor ) 47 Road No. 30, Mirpur, Dhaka Division - 1216

 

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71