পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার আউলিয়া ঘাটে সাম্প্রতিক নৌকা ডুবির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। ঘটনার দিন রাতেই ৫
সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ ঘটনায় তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা থাকলেও নৌকাডুবির সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকায় কমিটির সদস্যরা
আরও তিন দিন সময় বাড়িয়ে নেন। অবশেষে রবিবার রাতে তারা তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন।
সোমবার (৩ অক্টোবর) জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। এ ঘটনার সাথে ঘাটের মাঝি, ইজারাদার, ওই দিন উপস্থিত কেউই সচেতন ছিলেন না। তদন্তে এসব বিষয় উঠে এসেছে। এ ছাড়া পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস তদন্ত করছে। তারা এখনো রিপোর্ট জমা দেননি। ’
ফায়ার সার্ভিসের পঞ্চগড় স্টেশন মাস্টার তুষার কান্তি জানিয়েছেন, টানা আটদিন ধরে চলা উদ্ধার অভিযান সীমিত করা হয়েছে। এর আগে ফায়ার সার্ভিসের রংপুর রাজশাহী ও কুড়িগ্রামের আটটি ইউনিটে ৭০ জনের ডুবুরিদল কাজ করছিল। সোমবার ভোর থেকে ফায়ার সার্ভিসের শুধুমাত্র বোদা থানার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি দল উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিসের বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা শাহজাহান আলী জানান, ৭ জন সদস্য বালুচড়গুলোতে মরদেহ খোঁজাখুজি অব্যাহত রেখেছেন। স্পিডবোট নেই বলে সাধারণ নৌকায় চড়ে মরদেহ খোঁজা হচ্ছে।
১৫ লাখ টাকা দিলো বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন
এদিকে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত পরিবারের সদস্যদের মাঝে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন’। নিহত পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে একেবারে অসহায় হয়ে পরা অতি দরিদ্র ৯টি পরিবারের মাঝে ১৫ লাখ টাকা বিতরণ করেছে সংগঠনটি।
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের মাধ্যমে তারা চেক ও নগদ অর্থ হস্তান্তর করেন। এসময় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিন, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, নিহত পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ৯টি পরিবারের মাঝে ৩ লাখ, ২ লাখ, ১ লাখ করে মোট ১৫ লাখ টাকা ও খাদ্যসামগ্রীসহ পুজোর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের একটি প্যাকেট বিতরণ করা হয়। পরে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিন নৌকাডুবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় নৌকার মাঝিদের কাছে ১৪টি লাইফ জ্যাকেট বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে প্রায় দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা পানির নিচে ডুবে যায়। সরকারী তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ এখনো ৩ জন। তাদের মধ্যে ২ জন পুরুষ ও একজন শিশু।