আবারও উত্তপ্ত ইডেন কলেজ। সিট বাণিজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও রাজিয়া সুলতানার তোপের মুখে পড়েছেন সংগঠনটির কলেজ ছাত্রলীগ সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। তাকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত।
জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিভিন্ন অনিয়ম, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য ও হল দখল নিয়ে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন জান্নাতুল ফেরদৌস। এর দুদিন পর শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে জান্নাতুলকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা। এ সময় তাকে হেনস্তা করারও অভিযোগ ওঠে।
কথা-কাটাকাটির একটি অডিও রেকর্ডে শোনা যায় জান্নাতুল ফেরদৌস বলছেন, আমাকে হাত ধরতেছে, সবাই আমার পিছনে লাগছে, আমাকে রোকসানা ধরছে। রিতু, স্বর্ণা, নুরজাহান, ফেরদৌসী, লিমা আপু, পপি, জ্যোতি আপু আছে; মীম ইসলাম আছে, বিজলী আছে, রোকসানা আছে। তারা আমাকে ধরছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার মধ্যে হওয়া বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের সঙ্গে সহসভাপতিসহ আরেকটি গ্রুপের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে চলে যায়।
এ বিষয়ে শনিবার রাত দেড়টার দিকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি জানান, সিট বাণিজ্য নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাকে কক্ষে আটকে মারধর করা হয়েছে। তার আপত্তিকর ছবিও তুলে রেখেছেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও তাদের সমর্থকরা।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে জান্নাতুল ফেরদৌস আত্মহত্যা করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে তামান্না জেসমিন রিভার একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। যেখানে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ার কারণে রাজিয়া বেগম ছাত্রীনিবাসের ২০২ নম্বর কক্ষের কয়েকজন ছাত্রীকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিতে শোনা যায় তামান্নাকে। সেখানে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলতে শোনা যায় তাকে। সেই বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চান।
এরপর আবার রিভার বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে ৭ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন এবং নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করার হুমকির অভিযোগ উঠে। আগের অডিওটি রেকর্ড ও ফাঁস কে করেছে তা জানতে তাদের সকাল ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রিভার কক্ষে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর নতুন করে বিতর্কে নাম এসেছে ছাত্রলীগ নেত্রী রিভার।