নিম্নমানের জেরিক্যান ও ত্রুটিপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থার কারণে চট্টগ্রামের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমসের তদন্তে উঠে এসেছে এ তথ্য।
চট্টগ্রামের আল-রাজি কেমিক্যাল কোম্পানির হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের চালানে কম্বোডিয়াতে আগুন লাগে। পরবর্তী চালান নিতে অস্বীকৃতি জানায় দেশটির শিপিং কোম্পানি।সেই ত্রুটিপূর্ণ চালানই রাখা হয় বিএম ডিপোতে। পরে সেখানে আগুন লেগে প্রাণ হারান প্রায় অর্ধশত মানুষ।
তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, গত ছয় এপ্রিল স্মার্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আল রাজি কেমিক্যালের একটি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের চালান যায় কম্বোডিয়ার সিহানৌকভিল বন্দরে। ২৩ মে কেমিক্যালবাহী জাহাজটিতে আগুন লাগে। সেখানকার তদন্তে উঠে আসে, নিম্নমানের জেরিকেন ও ত্রুটিপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থার কারণেই এ অগ্নিকাণ্ড হয়।
এই ঘটনার পর আল রাজি কেমিক্যালের ১৬ কনটেইনারের একটি চালানের বুকিং বাতিল করে ও কনটেইনার ফেরত চায় শিপিং কোম্পানি মার্স্ক লাইন। কিন্তু কোম্পানিটি এতে সাড়া না দিয়ে কেমিক্যালের জেরিকেন ভর্তি কনটেইনার বিএম ডিপোতে রেখে দেয়। কারণ বিএম ডিপো আর কেমিক্যালের মালিক একই ব্যক্তি। পাঁচ জুলাই এসবের একটি কনটেইনার থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়। প্রাণ হারায় ৪৯ জন।
ডিপোতে ফায়ার হাইড্রেন্ট না থাকা, আগুন নেভানোর দক্ষ কর্মীর অভাব, ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা না করাসহ অনেক গাফিলতির তথ্য উঠে এসেছে তদন্তে। একই সাথে বিস্ফোরণস্থলে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিহতদের পরিবার ও আহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে তদারককারি সংস্থাগুলোকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।