এবার রোজা শুরু হচ্ছে প্রচণ্ড গরমের সময়ে। তাই সেহরিতে দিনভর রোজা রেখে সুস্থ থাকতে কিছু খাবারকে বেছে নিতে পারেন। এ জন্য খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে, প্রচুর পানি, মৌসুমি ফল ও সবজির জুস বা স্মুদি, তরল, ঠাণ্ডা, আঁশজাতীয় খাবার ইত্যাদি।
সেহরিতে যা খাবেন
অনেকের ধারণা, যেহেতু সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে তাই সেহরির সময় প্রচুর খেতে হবে-এই ধারণা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
কারণ, চার–পাঁচ ঘণ্টা পার হলেই খাদ্যগুলো পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়ে যায়। তাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি না খাওয়াই ভালো বরং মাত্রাতিরিক্ত খেলে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।
* সেহরিতে ভাতের সঙ্গে মিশ্র সবজি, মাছ অথবা মাংস খেতে পারেন। রাখতে পারেন দই। অনেকে ভাত খাওয়ার পর হালকা চিড়ার সঙ্গে দ্ই খান। এটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার যাতে পানির তৃষ্ণাও মেটে।
* ভাত, রুটি, মসুর ডাল, শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাবেন। শর্করা ও আমিষজাতীয় খাবারগুলো পাকস্থলীতে পরিপাক হতে অনেক সময় লাগে। তাতে ক্ষুধা কম হয়।
* প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে এমন ফলমূল ও শাকসবজি খেলে দীর্ঘসময় পেট ভরা থাকবে। এছাড়া সবলও থাকবেন, সহজে ক্লান্তিতে ভুগবেন না। কিছু পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হলো- কলা, পালংশাক, ব্রোকলি, খরমুজ, মটর, মাশরুম ইত্যাদি।
* অনেকে পানির পরিবর্তে লেমন অথবা রোজ ওয়াটার, শরবত, ভিটামিন ওয়াটারসহ নানা ধরনের প্রক্রিয়াজাত পানীয় পান করেন। তবে রোজাদারদের শুধু বিশুদ্ধ পানি পান করাই ভালো। রোজাদারদের প্রচুর সবুজ শাকসবজি, ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন।
* রাতের খাবার কিছুটা হালকা ও সহজে হজম হয়, এমন হওয়া উচিত। তাই ভাতের সঙ্গে সবজি বেশি থাকা চাই। যেমন- লাউশাক, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, শসা, পটোল, ঝিঙে, কচুশাক, কচু ইত্যাদির তরকারি, এক টুকরা বড় মাছ অথবা মাংস খেতে পারেন। তবে কম মসলা দিয়ে রান্না করা মাছ বেশি উপকারী।
সেহরীতে যা করবেন না
* অনেকেই সেহেরির সময় একসঙ্গে বেশি পানি খেয়ে ফেলেন, এটা করা যাবে না। ইফতারের পর থেকে রাত পর্যন্ত অল্প অল্প করে পানি বা অন্যান্য তরল খেয়ে দেহকে আর্দ্র রাখতে হবে। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করবেন।
* চা, কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় আপনার তৃষ্ণা এবং শরীরের তাপমাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিবে।
* পরিহার করুন অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার। কারণ এ জাতীয় খাবার খেলে দেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়।
* সারাদিন খেতে পারবেন না বলে সেহেরিতে পেটভর্তি খাবার খাবেন না। পারলে এক-চতুর্থাংশ খালি রাখবেন। এতে অলসতা আসবে না। আর একবারে বেশি পানি পান করবেন না।
* খুব বেশি মসলাদার এবং ঝাল খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এগুলো খেলে বুক জ্বালাপোড়া হয় এবং হজমে সমস্যা করে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার পরিহার করুন। এতে হজমের সমস্যাসহ এসিডিটি ও নানা জটিলতা হতে পারে।