নাজমুল আকন (২৩) নামে এক কলেজছাত্রকে অপহরণের পর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণীর বিরুদ্ধে।
নাজমুল পটুয়াখালী সরকারী কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে ওই তরুণীসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
গত ৩ অক্টোবর ভুক্তভোগী নাজমুল বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং সিআর ১০৪৬/২০২১)। দায়ের করা মামলায় ইশরাত জাহান পাখি (২৫) নামের ওই তরুণীসহ আরও অজ্ঞাত ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে নাজমুলকে জোরপূর্বক বিয়ের একটি ভিডিও চিত্র আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ১৫ অক্টোবর দুপুরে ওই তরুণী নিজেকে নাজমুলের স্ত্রী দাবি করে নাজমুলের বাবা’র বাড়ি মির্জাগঞ্জে অবস্থান নেন। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে।
নাজমুল উপজেলার মির্জাগজ্ঞ ইউনিয়নের জালাল আকনের ছেলে এবং অভিযুক্ত নারী ইশরাত জাহান পাখি একই উপজেলার গাজিপুর এলাকার মো. আউয়াল হোসেনের মেয়ে।
মামলার নথির বরাত দিয়ে নাজমুলের আইনজীবী এড. আবদুল্লাহ্ আল নোমান জানান, নাজমুল পটুয়াখালী সরকারী কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের নিয়মিত ছাত্র এবং সে সরকারী কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। আসামী ইশরাত জাহান পাখি দীর্ঘদিন যাবত নাজমুলকে মোবাইল ফোনে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিয়ের প্রলোভন দেখায়।
এতে নাজমুল রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তাকে চোখ বেধে অপহরণ করে ২৮ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে কয়েকেজন ব্যক্তি বলপূর্বক তাকে একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। ধারনা করা হচ্ছে এটা দিয়ে তারা একটি কাবিননামা তৈরীর পরিকল্পনা করে। এ ঘটনায় দন্ডবিধির ১৪৩/৩৬৫/৩৭৯/৩৮৪/৫০৬ ধারা মোতাবেক আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে আদালতে উপস্থাপন করা ভিডিওতে দেখা যায় একটি কক্ষে ইশরাত জাহান পাখির বাম পাশে নাজমুল বসে আছেন, পেছন থেকে তার মাথার দুইদিক থেকে এক ব্যক্তি ধরে রেখেছে। সেখানে আর কয়েক জনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এসময় ওই নারীকে নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে। স্বাক্ষর গ্রহণের পর নাজমুলকে মিস্টি খাইয়ে দিলে নাজমুল তা মুখ থেকে ফেলে দেয়।
এ বিষয়ে ইশরাত জাহান সাংবাদিকদের বলেন, নাজমুলের সাথে তার দীর্ঘ দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিলো এবং নাজমুল নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন। অপহরণ কিংবা জোরপূর্বক বিয়ে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। এ কারণে বর্তমানে তিনি নাজমুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন।