বিচিত্র জীবনের সচিত্র প্রতিবেদন জীবন জীবনের জন্য । মানুষ মানুষের জন্য। একটু সহানুভূতি। কিন্তু সেই সহানুভূতি হবে তো মানুষের ক্ষেত্রে,মানুষকে তাই মানবিক হতে হয়।
মানুষ যদি মানুষ না, হয় তাহলে মানবিক গুণাবলী কি খুঁজে পাওয়া যায়।আসলে সব কিছুতেই ধাঁন্দা করি, তার মানে আমরা ধাঁন্দাবাজ। আজকের বিচিত্র জীবনে তেমনি এক শ্রেণীর মানুষের জীবন নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছি। এমন কোন সমাজ পৃথিবীতে আছে! যারা ঐ শ্রেণী জিবীদের ঘৃণা করে না। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ভিক্ষা বৃত্তকে ঘৃণা করতেন। উক্তিতে, ভিক্ষা করো না কর্ম করে খাও ”। কিন্তু ভিক্ষুক কি শোনে নবীজির এই বাণী কিংবা মানে? ভিক্ষার বদলে দান সদগা আর যাকাতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকতে আমরা কি মানছি? শুধু শুনছি ,বলছি,বুজছি, কিন্তু মানছি না ।পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রকৃতি চলমান জলে স্থলে সমস্ত বায়ুমন্ডলে। তাইতো পৃথিবী কখনো কখনো বিরূপ চরিত্র প্রকাশ করে। হয় জলোচ্ছাস, বন্যা, খরা, অতি শীত, অস্বভাবিক গরম, মহামারী। লক্ষণ বেশি দূরে না ।
কোভিড -১৯ করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীতে ২৫০ গ্রাম জীবাণু হবে কিনা সন্দেহ অথচ দীর্ঘ দুই বছর পেরিয়ে তিন বছর চলমান। শুরু যার আছে শেষ তার অনিবার্য। কিন্তু শেষ হয়েও শেষ হয় না ফসিল বিদ্যমান থাকে। ভিক্ষা বৃত্তি কোন পেশা হতে পারে না। কিন্তু সারা বিশ্বের এ পেশা ও নেশা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় প্রচলিত ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ,রাষ্ট্র , বিশ্ব সমাজ সর্বত্র পরিলক্ষিত। আমরা শুধু লোকচক্ষে জীবন জীবিকার অন্বেষণে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীকে ভিক্ষুক মনে করে থাকি। কিন্তু এই বিচিত্র জীবনে বাস্তব চিত্র বড়ই অদভূত।
প্রকৃত ভিক্ষুক এলক্ষ্যে প্রায় সত্যিকার অর্থে জীবন ধারণের প্রয়োজনে মানুষের কাছে হাত বাড়ায়। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা উন্নয়নশীল দেশটি আজ ভিক্ষা চাচ্ছে পৃথিবীর ধনী রাষ্ট্রের কাছে, বিশ্ব অর্থহীন সংস্থার কাছে, কারণ চিহ্নিত করলে- নৈতিক অবক্ষয় , দুর্নীতিগ্রস্ত, কর্ণধার ব্যক্তিবর্গের হীন স্বার্থ চরিতার্থ।
আফগানিস্তান ভিক্ষা চাচ্ছে একটা ভূমিকম্পের ফলশ্রুতিতে। ইয়েমেন ,লিবিয়া, সুদান রাষ্ট্রগুলো প্রাণের কারণে যুদ্ধের ফলে ভিক্ষার হাত বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো বিভিন্ন অজুহাতে নিজেদের ইজ্জত না ঢেকে পড়নের কাপড় ছিরে ভিক্ষা করে। কর্ণধার ব্যক্তিরা ফায়দা লুটে শ্রীলংকার মত।একটু ব্যক্তিত্ব বজায় রাখতে ইসলামের আকিদা অনুযায়ী পাথরে ফুল ফোটাতে পারে। কিন্তু কে কার কথা শুনে! শুনলেও এক কানে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দেয়।
এ বিচিত্র জীবন তথা পৃথিবীতে এমন বিচিত্র চিত্রই আমার দৃষ্টি গোচরিভূত হয়। তাই তো কিছু বলার চেষ্টা করছি, যতো দোষ নষ্ট ঘোষ। চোখের সামনে ঘরের দরজা নাড়া দিয়ে মানুষ যে বাড়ি বাড়ি কষ্ট করে, রোদে পুঁড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে এক মুষ্টি আহার উপকরণ যোগাতে ব্যস্ত শুধু তাদের ঘৃণা করি। ব্যক্তিগতভাবে আমিও সমর্থন করি না এই শ্রেণীর মানুষকে। তুলনা মূলক বিশ্লেষণে, এমন ভিক্ষুকের পাশে দাঁড়াতে- দান, সদকা কিংবা যাকাতের মালামাল নিয়ে সাহায্য করা উচিত। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন পেশা বৃত্তি করে তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করা উচিত। শহরের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করলে ভিক্ষাবৃত্তির প্রেক্ষাপট অনেক ভিন্ন ও ব্যাপক। হাটে,মাঠে, ঘাটে রাস্তায়, পার্কে বিরাজমান।
কিছু অসাধু ব্যক্তি বিনা পুঁজিতে অধিক লাভজনক চিন্তায়, জনবল বিনিয়োগ করে ভিক্ষাবৃত্ত করে সমাজের উচ্চ আসনে অবস্থান করে। পথশিশু, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষকে তারা ব্যবহার করে, মানুষের হৃদয় হরণ করার জন্য সুস্থ্য সবল শিশুদের বিকলাঙ্গ করে জনবহুল এলাকায় ভিক্ষা ভিত্তিতে নিয়োগ করে ।মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, দয়াশীল, দানশীল, সরল বিশ্বাসী,পূণ্য প্রত্যাশী, তাই তো বিনা বিচারে ঘৃণ্য কাজটি সমর্থ না করলেও কম বেশি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে।
এই বিচিত্র জীবনের আরেকটি সচিত্র প্রতিবেদন; উন্নত বিশ্বে ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয় ।আমার চোখে দেখা বিলেতের পাতাল ট্রেন স্টেশন কিংবা সুপার মলে কিছু ভিক্ষুক, দুঃখিত ভিক্ষুক বলা ঠিক হবে না যারা জীবিকার অন্বেষণে বিনিময় প্রত্যাশা করে, যাদের কেউ কেউ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ,গান গেয়ে, বিগ ইস্যু ম্যাগাজিনের বিনিময়ে আর্থিক সাহায্য নিয়ে থাকে। তারা কাউকে বাধ্য করে না। জমিনে কিংবা মেঝেতে একটা কাপড় বিছানো থাকে এবং সামনে একটা কৌটা থাকে। আবার আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থানে পর্যটকদের কে দৈহিক কষরত প্রদর্শণ করে অধিক সাহায্য প্রত্যাশা করে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যায়। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ায় একটা জনগোষ্ঠী ইউরোপের কম উন্নত দেশের জনগোষ্ঠীর বিনিময় বিহীন ভিক্ষাবৃত্তি করে।
এই শ্রেণীর ভিক্ষুক ছড়িয়ে ছিটিয়ে সর্বস্তরে বিরাজমান। তবে মজার ব্যাপার এরা কারো কাছে বা কাজের কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি করে না। দুঃখের বিষয় বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় কিছু বাঙালি ভিক্ষা করতে দেখা যায়। তখন লজ্জায় মুখ লুকানোর সুযোগ মিলে না।আর এক শ্রেণীর লোক আছে যারা কর্মদক্ষ হয়েও কাজ না করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে।পাশাপাশি সরকারের খাজনা না দিয়ে নগদ লেন-দেনের মাধ্যমে নগদ অর্থ উপার্জন করে। অনেকর আবাইউরোপের দেশে বাড়ি, গাড়ি , ব্যবসা চলমান, বাংলাদেশে তো আছেই।
তাদের সাথে অর্থনৈতিক ভাবে লাভের হিসাব কষা নিরর্থক। মানুষের অর্থনৈতিক সম্মৃদ্ধি যতোই হোক না কেন, অভ্যাস বা স্বভাব কখনো বদলায় না। এতো কিছুর পরেও তাদের অভাবের শেষ নেই। এক সময় তাদের লাভের গুড় পিঁপড়ায় খাবে। এই বিচিত্র জীবনের সচিত্র প্রতিবেদন আজকের মত ইতি টানবো সরল সমিকরণে যা বুঝি কোন কিছু সাথে তুলনা বা প্রতিযোগিতা না করে আত্ম তৃপ্তিতে যে তুষ্টি পাওয়া যায়, সেখানে সুখ অনাবিল-অনন্ত শান্তি অবিরত সীমাহীন।
আরও পড়ুন বিচিত্র জীবনের সচিত্র প্রতিবেদন পর্ব -১
আরও পড়ুন খাঁটি সোনার বাংলার – খাঁটি সোনার মানুষ পর্ব ২
আরও পড়ুন বিচিত্র জীবনের সচিত্র প্রতিবেদন, পর্ব-৩