লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নে অপহরণের ৫ ঘণ্টা পর দেড়লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন অপহৃত মজিদুল নামে এক যুবক।
এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন মুক্তিপ্রাপ্ত মজিদুল।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকেলে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মুক্তিপণের টাকা পেয়েই বুধবার (১৭ মে) রাত ১টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয় অপহরনকারীরা।
মুক্তি পাওয়া যুবক মজিদুল ইসলাম লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের হিরামানিক গ্রামের মৃত আহের আলীর ছেলে।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, হারাটি ইউনিয়নের ওকড়াবাড়ি বাজার থেকে রাত ১০ টার দিকে অপহৃদ মজিদুল তার বাড়ি ফিরছিল। এ সময় বাজার পার হয়েই কিছুদুর যেতেই মজিদুল অপহরণের শিকার হয়। অপহরণের প্রায় ৫ ঘণ্টা পর রাত ১টার দিকে অপহৃত মজিদুলকে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অপহৃত যুবক মজিদুল জানান, আমার কিছু দেনার জন্য আমার চার শতক জম ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রয় করি। সেই টাকা পাওনাদারদের দেয়ার জন্য রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির পাশে ওকড়াবাড়ি বাজারে তাদের ডাকি। পাওনাদারদের টাকা দিতে যাওয়ার পথেই স্থানীয় সোহাইব ইসলাম শিমুল নামে এক ব্যক্তি তাকে মটর সাইকেলে তুলে কাজির চওড়া স্কুলের পিছনে নিয়ে যায়।
সেখানে আগে থেকেই আরো ৬/৭ জন অপহরনকারী উপস্থিত ছিল। পরে তারা আমাকে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ও মাথায় মারতে তাকে এবং বলে তোর কাছে টাকা আছে সেই টাকা আমাদের দিয়ে দে। নইলে তোকে মেরে সেফটি ট্যাঙ্কে ফেলে দিব। এ সময় শিমুল তার পকেটে থাকা ১লাখ ৪০ হাজার টাকা বাহির করে নেয়। পরে তার কাছে আরো টাকা চাইলে সে বলে আমার কাছে আর কোন টাকা নাই। এ কথা বলার সাথে সাথে সবাই তাকে আবার মারতে থাকে।
এ সময় শিমুল বলে শালা বাড়িতে তোর মটর সাইকেল আছে তোর মাকে বল সেটা নিয়ে আসতে। নইলে আজকে তোকে লাশ হতে হবে। পরে তারা আমার মাকে ফোন দিয়ে বলে ছেলেকে ফিরে পেতে হলে লোক পাঠিয়ে দিচ্ছি তার হাতে মটর সাইকেলটি দিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর বাড়ি থেকে গাড়িটি এনে তাদের লোকের কাছেই ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে তারপর গভীর রাতে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আমি অেহরনকারীদের ৩/৪জনকে চিনি তাই তাদের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি অভিযোগ দেই। অভিযোগ দেয়ার পর পরই পুলিশ এসে তদন্ত করে।
মুক্তিপ্রাপ্ত যুবকের মা জানান, অপহরণকারী শিমুল ও তার ৬/৭ জন সঙ্গীরা তার ছেলের জন্য দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। মুক্তিপণ না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। তার ছেলের পকেটে জমি বিক্রয়ের ১লাখ ৪০ হাজার টাকা পাওয়ার পর আরো ১০ হাজার টাকা দাবী করে। এজন্য তারা আবারো ফোন করে মটর সাইকেলটি দেয়ার জনয় তাগাদা দেয়। পরে তাদের লোক এসে বাড়ি থেকে তার ছেলের মটর সাইকেলটি নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে টাকা পাওয়ার পর রাত ১ টার দিকে অপহৃত তার ছেলে মজিদুলকে ছেড়ে দেয় বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলম জানান, অপহরণের ঘটনায় অপহৃত যুবক একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পরই ঘটনা স্থলে তদন্তের জন্য অফিসার পাঠানো হয়েচে। তদন্ত শেষ হলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন