পটুয়াখালীর দশমিনায় নদী ভাঙ্গনে ঘরহারা পরিবারটির আশা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি ঘর পাওয়া। উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের ঘূর্ণিচর গ্রামে ৯নং ওয়ার্ডের জেলে মো. জাকির হোসেন ফকির (৭০) হচ্ছেন মৃত. বারেক ফকিরের ছেলে। তার বাড়ি ঘর তেতুলিয়া নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গত কয়েক বছর ধরে ভাঙ্গনে কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করে একাধিক জায়গায় ঘর তুললেও সর্বনাশা তেতুলিয়া নদী যেন জাকির ফকিরের দিকে হা করে আছে। তাইতো যেখানেই যাচ্ছে নদী তাদের ঘর বাড়ি গ্রাস করে নিচ্ছে।
বুধবার (০১ মার্চ) জাকির ফকিরের সাথে সাক্ষাৎ হলে তিনি তার করুন কাহিনী বলেন। এ বিষয়ে তিনি জানান, আমাদের গ্রামের বহু পরিবারের বসত বাড়ি ও আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আমাদের বাব-দাদাদের ১টি দাগে ১৮ কানি জমি ছিল। আর বাড়ির দাগে ৬ কানি জায়গা ছিল। তেতুলিয়া নদীর অপ্রতিরূদ্ধ ভাঙ্গনের ফলে আমাদের সব বিলীন হয়ে গেছে। আমি একজন জেলে মানুষ। অন্য মানুষের সাভারে মাছ ধরে কোন মতে চলে আমার সংসার। বারবার জায়গা জমি করে ঘর তোলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
আমার ৪ মেয়েকে নিয়ে তাই এখন নদীর এক পাড়ে ছাপড়া দিয়ে থাকি। তাই সরকার যদি আমাদেরকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিত তাহলে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বাকি জীবনটা পাড়ি দিতে পারতাম। এ বিষয়ে জাকির ফকিরের স্ত্রী রাহিমা বেগম (৬০) বলেন, মোর চাইরডা মাইয়া আছে। মোর স্বামী অন্য মাইনষের লগে মাছ ধরার কাজ করে। মোগো ঘরডা নদীতে ভাইংগা গেছে।
এহন মোরা কই যামু, কোথায় থাকমু বলতে পারি না। মোর চাইরডা মেয়ের মধ্যে দুইডা মেয়ের বিয়া বাকি আছে। ওদেরকে বিয়া দিতে হবে। কিন্তু ঘর বাড়ি না থাকায় ভালো সমন্দোও আয় না। তিনি তার চোখ মুছতে মুছতে আরো বলেন, বৃষ্টি আইলেই আউলিয়াপুর একটি স্কুলে যাইয়া থাহি। এহন ছাপড়া দিয়া থাহি। মোগো একটা ঘর দেতে পারেন বাবা। এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের আবু মিয়া ফকির, আব্দুল মান্নান মাস্টার, মোসলেম রাড়ী, আ. রহিম জোমদ্দার ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার সহ এলাকাবাসী জানিয়েছে, এই গ্রামে অনেক পরিবারের বসবাস ছিল। গ্রামটির একটি অংশ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। এখানে জাকির ফকিরের বাব দাদাদের অনেক জায়গা ছিল।
নদীতে তার আবাদি জমি বিলীন হয়েছে নদী গর্ভে। বাড়িঘর হারিয়ে ভাঙ্গনের শিকার জাকির ফকির দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। জাকির ফকিরের ৪টি মেয়ে আছে। তাদের এখন সরকারি সহায়তা ও ঘরের প্রয়োজন।
এ বিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারেফ ফকির ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজ মিয়া বলেন, আসলেই জাকির ফকির অসহায় পরিবার। তার একটি ঘর হলে পরিবারটি ঘর হারানোর শোক ভুলতে পারবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল মাহমুদ লিটন বলেন, জাকির ফকিরের পাশে সবার দাড়ানো উচিত। তার একটি ঘর এখন খুবই প্রয়োজন। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আজিজ মিয়া বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা হত দরিদ্রদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। কেউ গৃহহীন থাকবে না।
এ বিষয়ে দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিন বলেন, আবেদন পেলে যাচাই বাছাই করে ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে ১১৩ পটুয়াখালী-৩ গলাচিপা-দশমিনা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা (এমপি) বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার যতদিন আছে ততদিন মানুষের কল্যানে কাজ করে যাবেন। এই সময়ে সকল দরিদ্র মানুষের জন্য শতভাগ গৃহের ব্যবস্থা চলমান থাকবে।