জার্মানির রাজধানী বার্লিনের মিত্রে জেলায় পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুর লবিতে ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৭২ গ্যালন পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি অ্যাকুরিয়াম ফেটে গেছে। এর ফলে পানিসহ দেড় হাজার মাছ ব্যস্ত সড়কে ছড়িয়ে পড়েছে। জরুরী পরিষেবার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
লন্ডন ভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটি জানায়, বিশ্বের সর্ববৃহৎ অ্যাকুরিয়ামটি ১৪ মিটার উঁচু ছিল।
অ্যাকুরিয়ামটি বাদেও ওই পাঁচ তারকা হোটেলটিতে একটি মিউজিয়াম রয়েছে। এই দুর্ঘটনার পর জরুরী পরিষেবার ১০০ কর্মী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
রেডিসন ব্লু থাকা নাজ মাসরাফ বলেন, ‘ভূমিকম্প হচ্ছে আমার কাছে এমন অনুভূতি হয়েছিল। ’ ওই হোটেলে থাকা সান্দ্রা ইউসার বলেন, ‘ওই সময় হোটেলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পুরো অ্যাকুরিয়ামটি ফেটে গেছে। বাকি রয়েছে ধ্বংসাবেশ ও প্রচুর মৃত মাছ। ’
শুক্রবারের এই ঘটনায় দেড় হাজারেরও বেশি মাছ মারা গেছে বলে জানিয়েছে ইউনিয়ন ইনভেস্টমেন্টের মুখপাত্র, যারা কি না রেডিসন ব্লুর মালিক। ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘মাছগুলোকে উদ্ধার করে একটি ছোট ট্যাংকে রাখা হয়েছিল। এই ঘটনার জন্য গোটা হোটেলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ’
কি কারণে এমনটি হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এই দুর্ঘটনা খুব ভোরের দিকে ঘটায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন বার্লিনের মেয়র প্রাঞ্জিসকা গিফে। তিনি বলেন, ‘এতো ভোরে কেউ কাজে বের হয় না। এ জন্য হতাহতের তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদি এটি ৫টা ৪৫ মিনিটের বদলে এক ঘণ্টা পরে হতো তাহলে অনেক মানুষের প্রাণ যেতে পারতো। ’
এ দিকে এই দুর্ঘটনায় এক হোটেল কর্মীসহ দুজন আহত হয়েছেন। অ্যাকুরিয়ামের কাঁচের টুকরোর আঘাতে তারা আহত হয়েছে। ওই পাঁচ তারকা হোটেলের কাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে এমন শঙ্কায় সেখানে থাকা ৩৫০ অতিথিকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, অতিথিদের বাসে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে সকালের দিকে বার্লিনের তাপমাত্রা -৭ ডিগ্রিতে নেমে যাওয়ায় উদ্ধার কাজে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
এ দিকে দুর্ঘটনার পর এক মেইলের মাধ্যমে রেডিসন ব্লু হোটেলটি সাময়িক বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এক বিবৃতিতে সি লাইফ বলে, আমাদের দল ঘটনাটি দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিল। অ্যাকুরিয়ামের মালিকদের কাছ থেকে এই ঘটনার কারণ সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছে।
অ্যাকুরিয়ামটি ফেটে ছড়িয়ে পড়া বিপুল পরিমাণ পানিতে হোটেলের মূল ফটক, সামনের রাস্তা ও ফুটপাতে আবর্জনার স্তূপ তৈরি হয়। উদ্ধার কাজ চালাতে জরুরি বিভাগের প্রায় ১০০ কর্মীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। হোটেলের পাশে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।