বিশ্বকাপের শেষ সাত আসরের মধ্যে এ নিয়ে চতুর্থবার ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে ফ্রান্স। রাশিয়া বিশ্বকাপ ধরলে পরপর দুইবার। আর এর কৃতিত্ব খেলোয়াড়দের সঙ্গে দলের কোচ দিদিয়ের দেশমেরও। রাশিয়ায় দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন তিনি।
এবারও একই পথে ফরাসিরা। আগামীকাল লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনাকে হারালেই ইতালি, ব্রাজিলের পর টানা দুটি বিশ্বকাপ জয়ের অনন্য ইতিহাস গড়বে ফ্রান্স।
কাতারে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারলে দেশমও উঠে যাবেন ইতিহাসের পাতায়। ফ্রান্স প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ১৯৯৮ সালে। সেবার ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা উল্লাসে মাতে ফ্রান্স। অধিনায়ক হিসেবে দেশমই উঁচিয়ে ধরেছিলেন বিশ্বকাপ ট্রফি। এরপর কোচ হিসেবে জিতলেন ২০১৮ বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনাকে হারাতে পারলে প্রথম কোচ হিসেবে দেশম খেলোয়াড় হিসেবে একটি এবং কোচ হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের নজির গড়বেন।
অথচ সেদিকে ন্যূনতম ভ্রূক্ষেপ নেই দেশমের। এত বড় এক রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়েও নির্লিপ্ত তিনি, ‘এখানে আমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নই, দল গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আমি গর্বিত এবং আমরা সবাই জানি যে ফাইনালে আমাদের শিরোপা ধরে রাখার সুযোগ আছে। এর মধ্যেই আমরা দুর্দান্ত কিছু করেছি৷ রোববার যেন আরও খুশি হতে পারি, তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্ভাব্য সবকিছুই করব। আমি সত্যিই নিজেকে নিয়ে ভাবি না। যে সাফল্য আমরা পেয়েছি, তাতে আমি সন্তুষ্ট। ’
সন্তুষ্ট না হয়ে যাবেনই বা কোথায়। খেলোয়াড়-কোচ দেশমের আরও কিছু রেকর্ড যে অবাক করে দেওয়ার মতো। ডাগআউটে খুব ছটফটে দেখা না গেলেও দলকে নিয়ন্ত্রণ করার দারুন সক্ষমতা আছে তার। এটা যেন এক রহস্যই। রাশিয়া বিশ্বকাপ জয়ের আগে তার অধীনেই ফ্রান্স ২০১৬ ইউরোর ফাইনাল খেলে। এরপর ২০২১ সালে নেশনস লিগের ফাইনাল তার অধীনেই জেতে ফরাসিরা। সবচেয়ে বড় কথা, অদম্য এক স্কোয়াড গড়েছেন তিনি।
ফ্রান্স দলে এখন তারকার মেলা। তার সময়েই এত এত দুর্দান্ত খেলোয়াড় পেয়েছে ফ্রান্স। সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে, আঁতোয়ান গ্রিজমান, ওসমান দেম্বেলেরা তার সময়েই আলো ছড়িয়েছেন। পল পগবা, এনগোলো কান্তেরা এই বিশ্বকাপে নেই। তবে তারাও বিশ্বকে নিজেদের জানান দিয়েছেন দেশমের সময়েই। এছাড়া আদ্রিয়া রাবিও, কোলো মুয়ানি, অরিলিয়ে চুয়ামেনিরাও দলে শক্ত ভিত গড়েছেন দেশমের অধীনে থেকে।
এবারের বিশ্বকাপে ফ্রান্সের হয়ে দুর্দান্ত খেলা তারকা ফরোয়ার্ড গ্রিজমান তো তাই নিজের ক্যারিয়ারের উত্থানের জন্য পুরো কৃতিত্বই দিলেন দেশমকে। তিনি বলেছেন, ‘আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের জন্য আমি তার কাছে ঋণী। তার কারণে এই জার্সির জন্য এবং ফ্রান্সের জন্য আমি সবকিছু উজাড় করে দিয়েছি। আমার প্রতিটি ম্যাচে, প্রতিটি অ্যাকশন তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। তার দেওয়া ৭ নম্বর জার্সিটিকে গর্বিত করার জন্য আমি সবকিছু করতে চাই।