ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় চলন্ত প্রাইভেট কারের নিচে পিষ্ঠ হয়ে রুবিনার (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চাকরিচ্যুত অধ্যাপক জাফর শাহকে আসামি করে এ মামলা করা হয়। শাহবাগ থানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ গেটে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় রিকশা আরোহী নারীর রুবিনার মৃত্যু হয়।
একটি প্রাইভেটকার তাকে চাপা দিলে নারীটি প্রাইভেট কারের নিচে আটকে যায়। এ সময় চলন্ত গাড়ির চাকার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বেশ কিছুদুর যাওয়ার পর ওই নারীর মৃত্যু হয়।
নিউমার্কেট ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মাহবুব আলম জানান, দুপুরে দেবর নুরুল আমিনের মোটরসাইকেলে করে শাহবাগ থেকে হাজারীবাগের দিকে যাচ্ছিলেন রুবিনা। এ সময় শাহবাগ মোড়ে একটি প্রাইভেটকার পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে নীলক্ষেতের দিকে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ে যায়। এ সময় উপস্থিত জনতা গাড়ির দিকে ইট-পাটকেল মারতে থাকলেও চালক গাড়ি থামাননি। পরে স্থানীয় জনতা নীলক্ষেত মোড়ে গাড়িটিকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে মুমূর্ষু অবস্থায় রুবিনাকে উদ্ধার করে। এরপর দ্রুত ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক নারীটিকে মৃত ঘোষণা করে।
অন্যদিকে ঘাতক প্রাইভেটকারের চালক গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ঘাতক গাড়িচালকের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, চালক জাফর শাহ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চাকরিচ্যুত অধ্যাপক। নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে তার চাকরি চলে গিয়েছিল।
বোনকে হারিয়ে হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েন রুবিনার ভাই জাকির হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তেজকুনিপাড়ায় থাকতেন রুবিনা। তার স্বামী এক বছর আগে মারা গেছেন। তাদের একটি সন্তান রয়েছে। রুবিনা তার দেবরের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে হাজারীবাগে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বিপরীত পাশে মোটরসাইকেলটিকে একটি গাড়ি ধাক্কা দিলে রুবিনা গাড়ির সামনে পড়ে যায়। এ সময় তার দেবর নুরুল আমিনও পাশে পড়ে যান। পরে গাড়িটি রুবিনাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়।