একপাড়ে বাহেরচর বাজার, অন্যপাড়ে বড়ইতলা বাজার। এর মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে গহিনখালী খাল।
দু’পাড়ের মানুষ এই খালের ওপর থাকা দীর্ঘদিনের ভাঙা সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছিল। অবশেষে স্থায়ী সেতু না হলেও ঝুঁকিমুক্ত পারাপার হওয়ার জন্য নতুন ‘কাঠের সেতু’ পেয়েছেন দু’পাড়ের লোকজন। এতেই আনন্দিত তারা।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদরের প্রাণকেন্দ্রে বাহেরচর বাজার এবং পার্শ্ববর্তী ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত বড়ইতলা বাজার। স্থানীয়রা জানান, এই দুই পাড়ের মানুষের অভ্যন্তরীণ এবং উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দীর্ঘদিনের দাবি গহিনখালী খালের ওপর সেতু নির্মাণের। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
তাই দুই পাড়ের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যা ডা. জহির উদ্দিন আহমেদের নিজস্ব অর্থায়ণে এই কাঠের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন।
সেতু নির্মাণশ্রমিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৬ ফুট প্রস্থের এই সেতু নির্মাণে উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যয় হয় ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীরা জানান, এই সেতুর কারণে তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। এতে তারা আনন্দিত। উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলা বাজারের ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ বলেন, ‘নতুন কাঠের সেতু হওয়ার কারণে আমরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত। এই সেতু না থাকলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই সেতুটি আমাদের জন্য আর্শিবাদ।’
নবনির্মিত কাঠের সেতুটি বুধবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। লাল ফিতা কেটে সেতুটির উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহমেদ। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সালেক মূহিদ ও রাঙ্গাবালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যা ডা. জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাহেরচর বাজার এবং বড়তলা বাজার এই দুই পাড়ের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করে ভাঙা সেতু পারাপার হতো। তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য আমার নিজস্ব অর্থায়ণে একটি কাঠের সেতুটি নির্মাণ করি। আশা করছি, ওখানে স্থায়ী সেতুও নির্মাণ করা হবে। সে বিষয়ে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে উপজেলার গহিনখালী খালে ৬৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২ মিটার প্রস্থের একটি লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। সেতুটি পারাপারের অনুপযোগী হওয়ায় ২০১২ সালে এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এলজিইডি। পরবর্তীতে সেতুটি এলজিইডির পক্ষ থেকে ভেঙে নেওয়া হলে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। সেটিও ভেঙে ব্যবহারের অযোগ্য হলে নতুন এই কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়।