পটুয়াখালীর গলাচিপায় ক্যান্সার আক্রান্ত সাথী বেগম বাঁচার জন্য আকুতি জানিয়েছে। সাথী বেগম ওরফে ফুলবানু (৪৫) হচ্ছেন গলাচিপা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী রোডের পিতা হানিফ বেপারী ও মাতা শাহা ভানুর মেয়ে। সাথী বেগম ওরফে ফুলবানুর স্বামী জাহিদ সিপাই একজন মোটর সাইকেল ড্রাইভার। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) জাহিদ সিপাইয়ের স্ত্রী সাথী বেগমের বাসায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রায় আট মাস ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী সাথী বেগম। মুখ ও গলার টিউমার থেকে বাসা বেঁধেছে ক্যান্সার। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। তিন কন্যা, দুই পুত্র সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে একটি ছোট্ট বাড়ীতে তার বসবাস। মোটর সাইকেল ড্রাইভার স্বামীর আয়-রোজগার সীমিত। বেশিরভাগ অংশই চলে গেছে চিকিৎসা করাতে।
এখন সম্বল বলতে কিছু নাই। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে মোটর সাইকেলটিও বিক্রি করতে হয়েছে। তার মুখে ও গলায় টিউমার ধরা পড়ে। শুরুর দিকে চিকিৎসা করতে না পেরে পরে ঢাকায়
তাকে চিকিৎসা করানো হয়। ডাক্তারেরা বিভিন্ন পরীক্ষা করে তাকে অপারেশন করার পরামর্শ দেয়। মোটর সাইকেলটি বিক্রি করে অপারেশন করা হলেও ডাক্তার ক্যামো থেরাপী দিতে বলে। কিন্তু গরীব মানুষ বিধায় ধার ও ঋণ করে ৫টি ক্যামো দিলেও আর খরচ চালাতে পারছে না স্বামী জাহিদ সিপাই। বর্তমানে ডাক্তার তাকে আবার রেডেও থেরাপীর পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এ কথা শুনে স্বামী জাহিদ সিপাই ও ক্যান্সার আক্রান্ত সাথী বেগমের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। কারণ এখন তাদের যে আর চলছে না। তাই কান্না জড়িত কন্ঠে সাথী বেগম বলেন, আমার স্বামী যথাসাধ্য চেষ্টা কইরা আমাকে এতদুর চিকিৎসা করাইছে।
এহন আর পারছে না। তাহলে আমি কী আর বাঁচতে পারব না। আপনারা আমাকে কী একটু সহায়তা করতে পারবেন না। ক্যান্সার আক্রান্ত সাথী বেগম আরও জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, মাননীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। যাতে তাদের সহায়তায় রেডিও থেরাপী দিয়ে আমার জীবনটা আবার ফিরে পেতে পারি। এ বিষয়ে ওই এলাকার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মাহমুদা বেগম জানান, অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাদেরকে হাত পাততে হচ্ছে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে। সাহায্য এবং ধার-কর্জ করে কোনরকমে চলছে চিকিৎসা। তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে সাবেক কাউন্সিলর আবুল বশার বলেন, সাথী বেগমের ক্যান্সার হওয়ায় পরিবারটি চরম অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য সমাজের দানশীল ব্যক্তিরা এগিয়ে আসবেন বলে তিনি আশা করেন। সংশ্লিষ্ট পৌর কাউন্সিলর আবুল খায়ের বাবলু বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি। এখন সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে আসলে সাথী বেগম বাঁচতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. অলিউল্লাহ জানান. ক্যান্সারে আক্রান্ত সাথীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ক্যান্সার আক্রান্ত কোন রোগী বরাদ্দ পায়নি। তবে বরাদ্দ আসলে ক্যান্সার আক্রান্ত সাথী বেগমকে সহায়তা করা হবে। এদিকে তার চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের নিকট সহযোগিতার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন তার স্বামী জাহিদ সিপাই। তাকে সহযোগিতার জন্য এ নাম্বারে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭৬৮-১৬৪১৪৭।