গলাচিপা উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নকে তিন ভাগে বিভক্ত করার দাবিতে স্বোচ্চার এলাকাবাসী। এর আগে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। চরকাজল ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার ভোটার রয়েছে। ১০টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই ইউনিয়ন। জেলার বৃহৎ ইউনিয়নগুলো বিভক্ত করা হলেও এখনও এই চরকাজল ইউনিয়ন অবিভক্ত রয়েছে। এই কারণে ইউনিয়নের যথাযথ উন্নয়ন হচ্ছে না। প্রতিটি গ্রামের ও মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে চরকাজল ইউনিয়নকে তিন ভাগে বিভক্ত করার দাবি ইউনিয়নবাসীর। ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকে উন্নয়নের স্বার্থে জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিভক্ত করা হয়েছে। কিন্তু নদী বেষ্টিত চরকাজল ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিভক্ত করার দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো লাভ হয়নি। অতীতের কোনো চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিভক্তির উদ্যোগ নেননি।
ইউনিয়নের চেয়াম্যান হাবিব মোল্লা ও তার ছেলে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন মোল্লাসহ আরো অনেকে ইতোমধ্যে ইউনিয়ন বিভক্তির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন। ইউনিয়নের গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কার্লভাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হচ্ছে না। বিশাল এলাকা থাকায় দেশ স্বাধীনের পর থেকে এই ইউনিয়নের উন্নয়ন তুলনামূলক কম। ইউনিয়নের চরকাজল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের মিয়া বলেন, বিভক্তি না হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগে ভোগান্তি বেড়েছে আমাদের। সেবা নিতে আমাদের যেতে হয় অনেক দূরের ইউনিয়ন পরিষদে। রাস্তা-ঘাটেরও উন্নয়ন নেই। আমাদের জীবন জীবিকারও উন্নয়ন নেই। উন্নয়নের স্বার্থে ইউনিয়ন তিনভাগে বিভক্ত হওয়া প্রয়োজন। চরশিবা গ্রামের আনোয়ার আলোম খান বলেন, ইউনিয়নের এক সীমানা থেকে অন্য সীমানায় হেঁটে যেতে সারা দিন লাগে।
ইউনিয়ন বিভক্ত হলে আমরা সেবা পাবো বেশি এবং কষ্ট হবে কম। জাতীয় পার্টীর নেতা নজরুল বলেন, চরকাজল ইউনিয়ন আয়তনে অনেক বড় থাকায় ভাল কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন নেই, রাস্তা-ঘাটেরও উন্নয়ন নেই। ইউনিয়ন তিন ভাগে বিভক্তির দাবি আমাদের। চরকাজল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, চরকাজল ইউনিয়নে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটের যথাযথ উন্নয়ন নেই। মানুষ সেবা নিতে আসলে কয়েক কিলোমিটার দুর থেকে হেঁটে আসতে হয়। এতে মানুষের ভোগান্তি হয় মারাত্মক। ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার উন্নয়নসহ সেবা গ্রহিতাদের ভোগান্তি কমিয়ে আনতে ইউনিয়ন তিন ভাগে বিভক্ত করার দাবি আমাদের। চরকাজল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনের সময় থেকে এই ইউনিয়নকে তিন ভাগে ভাগ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। জেলা প্রশাসক বরাবরে ইউনিয়ন ভাগের জন্য আবেদন জমা দিয়েছি।
পটুয়াখালী জেলা পরিষদ সদস্য মাইনুল ইসলাম রনো বলেন, জেলার বৃহৎ ইউনিয়ন চরকাজল, এই ইউনিয়ন তিন ভাগে বিভক্ত না হওয়ায় যথাযথ উন্নয়ন হচ্ছে না। গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন নেই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন নেই। বেশি উন্নয়নের স্বার্থে ইউনিয়ন বিভক্ত হওয়া জরুরি প্রয়োজন। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, চরকাজল ইউনিয়ন অনেক বড় এটা আমাদের জানা আছে। এলাকার মানুষ যদি বিভক্ত করতে আগ্রহী হয়ে আমাদের কাছে আবেদন করেন এবং তাদের দাবি যদি সরকারের নির্দিষ্ট নীতিমালায় আওতায় আসে, তাহলে আমরা আইনী প্রক্রিয়ায় বিভক্ত করা জন্য চেষ্টা করবো।