২০১৪ সালে কাজের সূত্রে জর্ডানে তাদের পরিচয়। এরপর শুরু হয় কথা বলা। আর কথ বলতে বলতেই পরস্পরের কাছে আসা, মন দেওয়া-নেওয়া। তারপর সংসার গড়ার স্বপ্ন দেখতে
শুরু করেন দুজনই।
তবে করোনাভাইরাস সেই পথে কাটা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রেম তো কোনো বাধা মানে না, মানে না পরাজয়। তাই সব বাধা পেরিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর চার হাত এক হলো শ্রীলঙ্কান যুবক রোশান মিতন ও জয়পুরহাটের তরুণী রাহেনা বেগমের। রাহেনা বেগমের চেয়ে দুই বছরের ছোট রোশান। এখন লঙ্কান এ যুবক স্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশেই থেকে যেতে চান।
জানা যায়, রাহেনা বেগম জয়পুরহাট সদর উপজেলার উত্তর পাথুরিয়া গ্রামের শাহাদুল ইসলাম ও মনোয়ারা বেগমের মেঝ মেয়ে। জীবিকার তাগিদে ২০১৪ সালে জর্ডানে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে একটি কোম্পানিতে গার্মেন্টসকর্মী হিসেবে চাকরি নেন। সে কোম্পানির সুপারভাইজার ছিলেন লঙ্কান তরুণ রোশান মিতন। সেখানেই তাদের পরিচয়। এরপর তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক।
রাহেনা বেগম বলেন, পারিবারিকভাবে অল্প বয়সে বিয়ে হয়। আমার একটি ছেলেও রয়েছে। জর্ডানে যাওয়ার কিছুদিন পর স্বামী আমাকে ডিভোর্স দেন। পরে সেখানে আমাদের কোম্পানির সুপারভাইজার মুসলিম যুবক রোশানের সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে আমাদের প্রেম হয়। দেড় বছর আগে নিজ দেশ শ্রীলঙ্কায় ফিরে যান রোশান। একে অপরকে বিয়ে করতে সম্মত হই। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমি দেশে চলে আসি।
তিনি আরো জানান, সে শ্রীলঙ্কায় চলে যাওয়ার পর ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা হত। রোশানের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। রোশান ২২ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশে আসে। পরে তাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জয়পুরহাটের বাড়িতে নিয়ে আসি। দুই পরিবারের সবার সম্মতি ক্রমে ২৯ সেপ্টেম্বর অ্যাফিডেভিট করে আমদের বিয়ে হয়।
শ্রীলঙ্কান যুবক রোশান মিতন অল্প অল্প বাংলা বলতে পাড়লেও হিন্দীতে তিনি পারদর্শী। বোশান বলেন, শ্রীলঙ্কার গেলী মাকারার অধিবাসী আমি। বাবা সিয়ামা ও ফাতেমার বড় সন্তান আমি। আমি এখানে এসে বিয়ে করেছি, এখানেই থাকতে চাই।
রাহেনার বাবা শাহাদুল ইসলাম বলেন, রোশানের সম্পর্কে মেয়ে আমাদের জানায়। ছেলে মুসলিম হওয়াতে কোনো আপত্তি করিনি। তার পরিবারের সঙ্গে আমি নিজে কথা বলি। তাদের কথা অনেক ভালো লেগেছে।
দোগাছী ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) আবুল খায়ের বলেন, সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেছি।