সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ১০টার দিকে বিশ্বনাথ পৌর শহরের রামপাশা রোডস্থ আরামবাগ আবাসিক এলাকার গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় মুহিবুর রহমান সুইটকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কদর উদ্দিন ও তার পুত্র ছাত্রদল নেতা ইমনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
বিশ্বনাথ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক রফিক আলী জানান, রাত ১০টার দিকে যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট বিশ্বনাথ নতুন বাজারস্থ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (আপন ফাসের্মী) বন্ধ করে ছোটভাই মাহফুজুর রহমান সুয়েবকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন। তারা পৌর শহরের রামপাশা রোডস্থ আরামবাগ আবাসিক এলাকার গেইটের সামনে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি হলুদ কালারের মোটরসাইকেলে ২ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী তাদের ওভারটেক করে। তখন ওই মোটরসাইকেলের আরোহী একজনের মাথায় হেলমেট ও অপরজনের মুখে মাস্ক পরা ছিলে। মোটরসাইকেলটি ওভারটেক করার সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক পরা লোকটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মুহিবুর রহমান সুইটের মাথা লক্ষ্য করে কোপ দিলে তার মুখের বাম পাশে লেগে গুরুতর জখম হয়। এতে প্রাণে বেঁচে যান মুহিব।
পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক রফিক আলী জানান, বিশ্বনাথ উপজেলায় হলুদ কালারের মোটরসাইকেল নেই বললেই চলে। আর এই কালারের একটি মোটরসাইকেল রয়েছে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কদর উদ্দিনের পুত্র ছাত্রদল নেতা ইমনের। তাই ঘটনার পর রাত ১১টার দিকে ছাত্রদল নেতা ইমনকে মুঠোফোনে কল দেন মুহিবুর রহমান সুইটের রাজনৈতিক সহকর্মী যুবলীগ নেতা রাজু আহমদ।
এ সময় ইমনের কাছে রাজু জানতে চান তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি তার কাছে ছিল কি না। প্রতিউত্তরে ইমন জানান গাড়িটি তার বাবা কদর উদ্দিনের কাছে রয়েছে। রাজু তখন ইমনকে বলেন ‘ভাগনা তুমি তরামার বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করো আজকে তোমার গাড়িটি অন্য কোনো লোক নিয়েছে কি না’। রাজু-ইমনের ফোনালাপের কিছুক্ষণ পর ইমনের ফোন থেকে রাজুকে কল করে কদর উদ্দিন।
তখন রাজুকে গালি দিয়ে কদর একাধিকবার বলেন, ‘মুহিবকে আমি মেরেছি। কারো কোনো ক্ষমতা আছে আমাকে কিছু করার। যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে আসো আমি রিফাতের বাসার সামনে আছি’। কিছুক্ষণ পরই রাজুসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী রিফাতের বাসার সামনে গলে তখন তাদের দেখে মোটরসাইকেলে বিএনপি নেতা কদর উদ্দিন ও তার পুত্র ছাত্রদল নেতা ইমন সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে তাদের ধাওয়া করেন ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে বিশ্বনাথ পৌর শহরের পুরান বাজারস্থ জগন্নাথপুর রোডে কদর ও ইমনকে ধরে মারধর করে উত্তেজিত ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা। তাৎক্ষণিকভাবে কদর ও ইমনকে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান জানান, কদর ও ইমনকে আটক করা হয়েছে। হামলার ঘটনাটি অধিক গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।