গানে গানে শোষণ-বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেছেন। অর্ধশতাব্দিরও বেশি সময় ধরে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এই লড়াইয়ে নানা লাঞ্ছঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। তবুও থেমে যাননি তিনি।
মানুষের অধিকারের পক্ষে গড়ে ওঠা আন্দোলন-সংগ্রামে গণমানুষকে উজ্জীবিত করেছেন। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময় পথে পথে গান গেয়ে গণজাগরণ সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদকও। তিনি হলেন, গুণী গণসংগ্রামী অসংখ্য বাউল গানের রচয়িতা শাহ আব্দুল করিম। আজ এই প্রথিতযশা মানুষটির ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।
কিংবদন্তিতুল্য এই বাউলের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জের উজানধলের বাড়িতে দোয়া, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা এবং রাত ৯টা থেকে বাউল আসরের আয়োজন করা হয়েছে।
বাউল শাহ আব্দুল করিম সশরীরে আমাদের মাঝে না থাকলেও, তার লেখা মানবতার, অসাম্প্রদায়িকতার কথা লাখো বাউলের কণ্ঠে ছড়িয়েছে পৃথিবীব্যাপী। প্রয়াত এই বাউলের সুরধারার ভক্ত সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষি মানুষ। মৃত্যুর পর থেকে সর্বস্তরের বিশেষ করে সাধারণের কাছে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শাহ আব্দুল করিম।
তার ভক্ত বাউলেরা জানান, শাহ আব্দুল করিমের স্বপ্নের পৃথিবী দেখতেই পথে পথে গান গেয়ে বেড়ান তারা।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেরগুল আহমেদ বলেন, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের মানবতাবাদী ও অসাম্প্রদায়িক গান এখনকার প্রেক্ষাপটে বড়ই প্রাসঙ্গিক।
বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে/আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম/গাড়ি চলে না/আমি কূলহারা কলঙ্কিনী/ কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া/ আমি তোমার কলের গাড়ি/ সখী কুঞ্জ সাজাও গো/জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে মানুষ হয়ে তালাশ করলে/আমি বাংলা মায়ের ছেলেসহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শ্রষ্টা শাহ আব্দুল করিম। তিনি না থাকলেও গানে আর সুরে কখনো আনন্দ দেবে, কখনোবা গণজাগরণকে শাণিত করবে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মারা যান ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর।